খোলা বাজার২৪,শনিবার,৯ জানুয়ারি ২০১৬: জামাল উদ্দিন। বয়স ৩৮। বাড়ি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানার আলকরা ইউনিয়নের কুলাসার গ্রামে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন জামাল।
তিনি আলকরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বর্তমানে এলাকায় যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। স্থানীয় রাজনীতির কোন্দলে জড়িয়েছিলেন জামাল উদ্দিন।
গত ৫ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ৫২ মিনিটে জামাল উদ্দিন তার ফেসবুক আইডিতে তার চাচাত ভাই মুক্তিযোদ্বা মোহাম্মদ ইউছুফের মৃত্যুর খবর জানান।
জামাল উদ্দিন তার ফেসবুক আইডিতে লেখেন, ‘আমার চাচাত ভাই বীর মুক্তিযোদ্বা মোহাম্মদ ইউছুফ গতকাল বিকাল ৩ ঘটিকার সময় নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করিয়াছেন। আজ সকাল ১১টায় আমাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। গার্ড অফ অনার দিচ্ছেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাবু ও দেহময় ওসি তদন্ত মাহফুজ। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবুল হাসেম চেয়ারম্যান ও আলকরা ইউনিয়নের রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ জানাযায় অংশগ্রহন করে।’
কে জানতো ফেসবুকে চাচাতো ভাইয়ের মৃত্যুর খবর জানানোর ৩ দিন পরেই তাকেই হতে হবে লাশ? কে জানতো তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজা পড়ার পর তার জানাজাও পড়তে হবে আলকরাবাসীকে?
কেউ না জানলেও এমনটাই ঘটল। জামাল উদ্দিনকে হতে হল লাশ। দূর্বৃত্তদের হামলায় জামাল উদ্দিনের দেহ হল ক্ষত-বিক্ষত।
গত শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের পদুয়া বাজার এলাকায় জামাল উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করে দূর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে পুলিশ রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে তার মৃত্যু নিশ্চিতের পর লাশটি থানায় নেয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত পৌনে ৯টার দিকে ৫/৬ জন যুবক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পদুয়া রাস্তার মাথা এলাকা থেকে জামাল উদ্দিনকে জোরপূর্বক জিম্মি করে তুলে নিয়ে যায়। এরপর পদুয়া রাস্তার মাথা সংলগ্ন এলাকার নির্মাণাধীন একটি বিল্ডিংয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সে মারা যায় বলে জানায় ডাক্তাররা।
এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার জয়নাল আবেদীন শিমুল স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাসপাতালে আনার আগেই মারা যায় জামাল উদ্দিন। জামাল উদ্দিনের হাত, পা ও মুখে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে তার মৃত্যু হয়’।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, তার দলীয় লোকজনই জামাল উদ্দিনকে হত্যা করেছে। কারণ ওই এলাকাতে রাজনীতিতে ব্যাপক দলীয় কোন্দল ছিল। আর দলীয় কোন্দলে জড়িয়েছিলেন জামাল উদ্দিন।