খোলা বাজার২৪, সোমবার, ১১ জানুয়ারি ২০১৬ : ঋণপত্র (এলসি) খোলার সময় টাকা পাচারের সত্যতা খুঁজে বের করতে পাচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। পুঁজিযন্ত্র আমদানি করার সময় ঋণপত্র খোলা ও আমদানি পণ্যের উৎস দেশ থেকে সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে টাকা পাচারের যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা প্রমাণ করা যাচ্ছে না।
সম্প্রতি ঋণপত্র খোলার সময় আমদানি পণ্যের প্রকৃত দামের চেয়ে বেশি মূল্য ধরে বিদেশে টাকা পাচার করছে বলে অভিযোগ ওঠে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাসিক প্রতিবেদনে ঋণপত্র খোলার হালনাগাদ তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন মহল থেকে এ অভিযোগ তোলে। বিশেষ করে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে পুঁজিযন্ত্র কেনার ক্ষেত্রে অস্বাভাবিকতার বিষয়টি বেরিয়ে আসে। সে সময় রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিকসহ কয়েকটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এ সব ঋণপত্র খোলা হয়েছিল। ওই সময় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি পুঁজিযন্ত্র আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, সে সময় দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) পুঁজিযন্ত্র আমদানিতে টাকার পাচারের অভিযোগটি নিয়ে তদন্তে নামে। আমদানি সম্পর্কিত সকল কাগজপত্র চেয়ে পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংককে। এরপরই বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তে নামে বাংলাদেশ ব্যাংক। অনুসন্ধান শুরু করে কোনো কোনো ক্ষেত্রে টাকা পাচার হতে পারে তা নিয়ে। যে সব দেশ থেকে পুঁজিযন্ত্র আমদানি করা হয়েছিল, সে সব দেশের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের কাছে থেকে সঠিক তথ্য পায়নি তদন্তদল। বাংলাদেশে ঋণপত্র খোলার খোলার সময় যে মূল্য উল্লেখ করা হয় তার বাইরে কোনো তথ্য পাচ্ছে না।
তদন্ত দলের সূত্রটি জানায়, একই পণ্যের মানের তারতম্য, প্রযুক্তির ভিন্নতা ও পণ্যের ক্রয়াদেশ দেওয়ার সময় মধ্যস্থতাকারির বেশি মাত্রায় অংশগ্রহণ থাকার কারণে সঠিক তথ্য পাচ্ছে না বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত দল। ফলে পুঁজিযন্ত্র আমদানির ক্ষেত্রে টাকা পাচার বলে প্রতীয়মান হলেও বা বিভিন্ন মহল থেকে টাকা পাচারের অভিযোগ করা হলেও প্রমাণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
তবে ওভারইনভয়েজের মাধ্যমে টাকা পাচারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের যথেষ্ট জনবল না থাকা ও প্রযুক্তির ব্যবহারে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক মানের না হওয়ার কারণে টাকা পাচার প্রমাণ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের আরেকটি সূত্র।