
খোলা বাজার২৪,মঙ্গলবার,১২জানুয়ারি ২০১৬: মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ডের চূড়ান্ত রায়ের বিপক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে রিভিউ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। সুপ্রীম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মঙ্গলবার এ রিভিউ আবেদন করা হয়। আপিলের রায়ের ১৫ মাস পর সুপ্রীম কোর্টের ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর সাঈদীর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। নিয়ম অনুসারে, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ বা আসামিপক্ষের রিভিউ আবেদন করতে হয়। সে অনুসারে রিভিউয়ের সময় বাকি রয়েছে আর দুই দিন। এর মধ্যেই রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলেও আসামিপক্ষ রিভিউ আবেদন করবে কি না-তা এখনো জানা যায়নি।
মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালে প্রথম অভিযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে জামায়াত নেতা সাঈদীর বিচার শুরু হয়েছিল ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর। হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, নির্যাতন ও ধর্মান্তরে বাধ্য করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ রায়ের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় প্রথম তিন দিনে কমপক্ষে ৭০ জন নিহতের খবর পাওয়া যায়। ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সাঈদী আপিল করলে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেন।
আপিলের রায়ে ১০, ১৬ ও ১৯ নম্বর অভিযোগে হত্যা, নিপীড়ন, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ ও ধর্মান্তরে বাধ্য করায় সাঈদীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এখানে যাবজ্জীবন বলতে স্বাভাবিক মৃত্যুর সময় পর্যন্ত কারাবাস বোঝানো হয়েছে। এ ছাড়া ৮ নম্বর অভিযোগের একাংশের জন্য সাঈদীকে ১২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৭ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এর মধ্যে ৮ ও ১০ নম্বর অভিযোগে ইব্রাহিম কুট্টি ও বিসাবালীকে হত্যা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ঘরে আগুন দেওয়ার অভিযোগে সাঈদীর বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল।
আপিল বিভাগ থেকে এ পর্যন্ত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার পাঁচটি রায় এসেছে। এর মধ্যে শুধু সাঈদীর ক্ষেত্রেই রিভিউ বাকি রয়েছে। বাকি চার মামলায় জামায়াতে ইসলামীর দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা ও মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রিভিউ খারিজ হয়ে যাওয়ায় তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।