Wed. May 7th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

40খোলা বাজার২৪,শনিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০১৬: নিজেদের প্রেসিডেন্ট জন ‘দ্য বুলডোজার’ মাগুফুলির জন্য পাগলপ্রায় তাঞ্জানিয়ার জনগণ। গত বছরের অক্টোবরে ক্ষমতায় বসার পর, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছেন তিনি। এ প্রেসিডেন্টের গল্প এভাবেই তুলে ধরেছে সিএনএন।
দুর্নীতির ইস্যুটি পূর্ব আফ্রিকার দেশটিতে অনেকদিন ধরেই গলার কাঁটা। ২০১৪ সালে কেন্দ্রীয় ব্যংক থেকে প্রায় ১০ কোটি ডলার তুলে নেয় দেশটির জ্যেষ্ট রাজনীতিকরা। এ ঘটনায় দাতাগোষ্ঠীসমূহ বিপুল অনুদান বাতিল করে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির সূচকে একেবারে তলার দিক থেকে তিন নম্বরে অবস্থান দেশটির।
দুর্নীতিপরায়ণ শাসনব্যাবস্থার কারণে কিছুটা বোঝা যায়, কেন প্রচুর প্রাকৃতিক স¤পদ থাকা সত্ত্বেও এ দেশটি সাব-সাহারান আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম অনুদান-গ্রহীতা। তাঞ্জানিয়ায় দারিদ্র্য মহামারির মতো। দেশটির ৭০ শতাংশ মানুষের দৈনন্দিন আয় ২ ডলারেরও কম।
নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে মাগুফুলি ক্ষমতা গ্রহণের পরই পার্লামেন্টে প্রথম বক্তৃতায় উদ্দেশ্য পরিষ্কার করেন। সতর্ক করে দিয়ে বলেন, যেসব সরকারী কর্মকর্তা অলস ও প্রস্তুত হতে অনাগ্রহী, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি: তাদের অনেকদিন ধরেই সহ্য করা হয়েছে। এটাই শেষ।
তার নামের মাঝখানে বসেছে ‘দ্য বুলডোজার’ শব্দটি। একেবারেই বেমানান বলা যাবে না। ক্ষমতারোহনের কয়েক সপ্তাহ ও মাসের মধ্যেই তিনি দুর্নীতি ও আবর্জনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। মন্ত্রীসভার সদস্য সংখ্যা ৩০ থেকে কমিয়ে ১৯-এ এনেছেন। কিছু মন্ত্রণালয় একীভ’ত করেছেন। দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তা, যেমন: বন্দর কর্তৃপক্ষ মহাপরিচালক আওয়াধি মাশাওয়েফ ও দুর্নীতিবিরোধী প্রধান এডওয়ার্ড হোসেহকে বহিষ্কার করেছেন। রাজনীতিবিদদের জন্য অপ্রয়োজনীয় বিদেশসফর নিষিদ্ধ করেছেন। প্রয়োজনে বিদেশে গেলেও, গুটিকয়েক জ্যেষ্ট রাজনীতিবিদ ছাড়া বাকিরা কিছুতেই বিলাশবহুল বিজনেস ক্লাসে চড়তে পারবেন না। নিজে তিনি ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেন যে, কর্মীরা তাদের ডেস্কে আছে কিনা। বিলাসী রাষ্ট্রীয় ভোজসভার ইতি ঘটিয়েছেন। দেশটিতে কলেরার প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের বদলে বড় আকারে রাস্তা পরিষ্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন তিনি। এ দিন তিনি নিজেও রাস্তায় নিজ হাতে ময়লা পরিষ্কার করেন।
প্রেসিডেন্টের এমন সংস্কার কর্মসূচির ফলে দেশটির সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ও জনপ্রিয় হ্যাশট্যাগ ‘#হোয়্যাটউডমাগফুলিডু’ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহারকারীদের মধ্যে।
তাঞ্জানিয়ায় তার নামে জন্ম নিয়েছে নতুন এক ক্রিয়াপদের: মাগফুলিফাই! এর অর্থ অল্প খরচে বা দ্রুত কোন কাজ করতে পারা; করদাতাদের অর্থে জীবন উপভোগ করা থেকে সরকারী কর্মকর্তাদের বঞ্চিত করা; সমাজে অলস ও দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তাদের আতঙ্কিত করা! নিজ দেশ ছাড়িয়ে তার জনপ্রিয়তা এখন পাশের দেশেও সঞ্চারিত হয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ কেনিয়ায় মানুষদের আক্ষেপ, কেন তারা মাগফুলির মতো নেতা পেলেন না