খোলা বাজার২৪, রবিবার, ১৭ জানুয়ারি ২০১৬: নারায়ণগঞ্জে দুই শিশুসহ পাঁচজনকে হত্যার রহস্য উদঘাটনে তৎপরতা শুরু করেছে পুলিশ। দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আর এ থেকে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য।
এদিকে কয়েকটি মোটিভ নিয়ে নারায়ণগঞ্জের ২ নম্বর বাবুরাইল এলাকায় একই পরিবারের পাঁচজন হত্যাকাণ্ডের তদন্তকাজ এগিয়ে চলছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।
রোববার নারায়ণগঞ্জ শহরের ২নং বাবুরাইলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহম্মেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড। জেলা পুলিশ ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি র্যাবও ছায়া তদন্ত শুরু করেছে। সবগুলো কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে রহস্য উদঘাটন করে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে পারবো।’
২ জনকে আটকের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের আটক নয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেয়া হয়েছে।’ খুনিরা পেশাদার কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খুনিরা পেশাদার নাকি অপেশাদার সেটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা। পারিবারিক বিরোধ সম্ভাব্য একটি কারণ হতে পারে।’
নিহত পাঁচজনের মধ্যে দুটি শিশু রয়েছে। এ প্রসঙ্গে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি বলেন, শিশুরা সম্ভবত হত্যাকারীদের চিনে ফেলেছে। তাই হয়তো তাদের হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে।
এরই মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, প্রতারণাই এক্ষেত্রে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এর মূলে রয়েছে নিহত মোরশেদুল (২৫)।নাম প্রকাশ না করার শর্তে নারায়ণগঞ্জের এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, নিহত মোরশেদুল আবাসন ব্যবসার নামে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।
তবে টাকার পরিপাণ কতো তা জানা যায়নি।প্রাথমিকভাবে এর পরিমাণ দুই কোটি টাকা বলে মনে করা হচ্ছে।
কথা অনুযায়ী প্লট বা ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দিতে না পারায় সে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গা-ঢাকা দিতে শুরু করে।
গত দুই বছর ধরে যে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল।কোথাও দুই মাস আবার কোথাও তিন মাস বাসা ভাড়া করে থাকছিল।পাওনাদারদের কারণে সে কোথাও বেশি দিন বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে পারত না।
তবে কিলিং মিশনে ঠিক কারা অংশ নেয় তা এখনো জানা যায়নি। এ ক্ষেত্রে কিলার ভাড়া করা হয়েছিল কিনা তাও জানা যায়নি।তবে সুরতহাল প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছেন, ঘাতকরা পেশাদার কেউ নয়।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে নিহতদের লাশ রাখা হয়েছে। হাসপাতালের আরএমও ডা. আসাদুজ্জামান জানান, পুলিশ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আসলে ময়নাতদন্তের কাজ শুরু হবে।
দুপুরের দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট ফ্ল্যাটটি সিলগালা করে দিয়েছে পুলিশ। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ছাড়া আর কাউকে ভিড়তে দেওয়া হচ্ছে না। নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি।