Thu. Apr 24th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

17খোলা বাজার২৪,মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারি ২০১৬: ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে বাহারি পাটপণ্যের সমাহার। মেলায় অংশগ্রহণকারী পাটপণ্যের বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলছেন, রপ্তানি বাজারই ছিল আগে পাটজাত পণ্যের মূল বাজার। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের ভেতরে এসব পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি পণ্যের উৎপাদনেও এসেছে বৈচিত্র্য।
প্রতিবছরের মতো এবারও রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে আয়োজিত মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলায় পাটপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে একটি জায়গা করে দিয়েছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি)। সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের ৫ নম্বর রিজার্ভ প্যাভিলিয়নে আছে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনসহ (বিজেএমসি) ছয়টি জেলার ২৫টি ছোট-বড় প্রতিষ্ঠানের স্টল। এর বাইরে আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের স্টলে পাটের তৈরি নানা ধরনের ব্যাগ, পার্টস, জুতা, পুতুল, ম্যাট, শতরঞ্জি, শিকা, পাপোশ, সুতা, ঝুড়ি, ল্যাম্পশেড, কাপড়, টুপি, চাবির রিং, মানিব্যাগ, ক্যালেন্ডার, কম্বল, পাট ও প্লাস্টিকের সমন্বয়ে তৈরি ফাইবার গ্লাসসহ বিভিন্ন গৃহস্থালি পণ্যের পসরা সাজিয়েছে।
মেলার ভিআইপি ফটক দিয়ে ঢুকলেই প্রথমে যে কারোরই নজর কাড়বে পাটজাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জুটেক্সকোর ২২৬ নম্বর স্টল। এ স্টলে পাওয়া যাচ্ছে পাটের উন্নত মানের কাপড়, বিভিন্ন ডিজাইনের হাতব্যাগ, ল্যাপটপ, শপিং ও মহিলাদের ব্যবহার্য ব্যাগ। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক মো. সোহেল রানা বলেন, এবারের মেলায় তাঁরা পরীক্ষামূলকভাবে আট জোড়া পাটের তৈরি জুতা এনেছিলেন। প্রথম দিনেই বেশির ভাগ বিক্রি হয়ে গেছে। পরে আড়াই হাজার পিসের ক্রয়াদেশ পেয়েছেন। সোহেল রানা জানান, সব মিলিয়ে তাঁদের স্টলে ৩০ ধরনের পাটপণ্য রয়েছে। যেগুলোর দাম ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে।
সোহেল রানা আরও বলেন, সাধারণত বিদেশি ক্রয়াদেশের অর্ডারের ভিত্তিতেই তাঁদের প্রতিষ্ঠান নানা ধরনের পণ্য তৈরি করে। তবে এখন দেশের ভেতরেই এসব পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
জেডিপিসির প্যাভিলিয়নে আরজে ক্র্যাফট লিমিটেডের বিক্রয়কর্মী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, পাটের তৈরি বিভিন্ন ধরনের ব্যাগের প্রতিই ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। প্রতিষ্ঠানটির নিজেদের তৈরি মহিলাদের ব্যাগ ২০০ থেকে ৪৫০ টাকা, স্কুলব্যাগ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, ল্যাপটপের ব্যাগ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা এবং লাঞ্চ ব্যাগ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে জেডিপিসির প্যাভিলিয়নে আলাদা স্টলে শুধু পাটের তৈরি জুতা নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছে পানসী নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক আশরাফুল ইসলাম বলেন, এবারের মেলায় তাঁদের বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ১৫ লাখ টাকা। এর মধ্যেই ৫ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হয়ে গেছে।
পাটপণ্য প্রস্তুতকারক অপর প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেডের স্টলে ১৫০ টাকায় ফুলের টবের বাস্কেট, ৩০০ টাকায় টিফিন বক্স, ১৫০ টাকায় পাপোশ, ৪৫০ টাকায় ওড়না ও ৪০০ টাকায় টেবিল ম্যাট বিক্রি হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয়কর্মী হুসাইন মাহমুদ জানান, তাঁদের উৎপাদিত পণ্য দেশের বাজারের পাশাপাশি সুইজারল্যান্ড, আমেরিকা, জাপানসহ কয়েকটি দেশে রপ্তানি হয়।
মেলায় অংশ নেওয়া রাজশাহীর লাল চাঁদ মৃৎশিল্প ও হ্যান্ডিক্র্যাফটস মেলায় এনেছে বিভিন্ন ধরনের বাহারি ল্যাম্পশেড। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের মতে, এ ল্যাম্পশেডগুলো এবারকার মেলার বিশেষ আকর্ষণ। যেগুলোর দাম ৪০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিজেএমসির স্টলে পাটের কম্বল, হেলমেট, পাটের ক্যালেন্ডার এবং পাট ও প্লাস্টিকের সমন্বয়ে তৈরি জুটো ফাইবার গ্লাসের মতো ব্যতিক্রমী কিছু পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করা হচ্ছে।
বিজেএমসির স্টলের বিক্রয়কর্মীরা জানান, উৎপাদিত পণ্যের প্রচারের জন্যই মেলায় অংশগ্রহণ। বাণিজ্য মেলা পণ্যের প্রচারের ক্ষেত্রে বড় সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এ মেলার মাধ্যমে তাঁরা ক্রেতাদের চাহিদা ও আগ্রহ সম্পর্কেও ধারণা পাচ্ছেন।