খোলা বাজার২৪,মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারি ২০১৬: প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস পাওয়ার পর নিজেরা আলোচনা করে কর্মবিরতি কর্মসূচির আপাতত ইতি টেনেছে আন্দোলনরত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বৈঠকের পর ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ এস এম মাকসুদ কামাল সাংবাদিকদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। তার কথায় আমাদের আস্থা রয়েছে।
“কর্মবিরতি কর্মসূচি আমরা স্থগিত করেছি। কাল থেকে আমরা ক্লাসে যাব।”
এর মধ্যদিয়ে নয় দিন পর বুধবার সচল হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বেতন কাঠামোর বৈষম্য নিরসনের দাবিতে ১১ জানুয়ারি শিক্ষকরা কর্মবিরতি শুরু করলে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
সোমবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরই ফেডারেশনের নেতারা কর্মসূচি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তবে বলেছিলেন, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন তারা।
কর্মসূচি স্থগিত করলেও দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থেকে সরছেন না বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ কামাল।
তিনি বলেন, “আগামী ৩ ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত অপেক্ষার পর আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই সময়ের মধ্যে দাবি পূরণে বিলম্ব কিংবা খণ্ডিত আকারে পূরণ করা হলে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
গত মাসে অষ্টম বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশের পর আন্দোলন জোরদার করেন আগে থেকে এনিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা।
শিক্ষকদের কর্মবিরতির কারণে শূন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলাভবনের একটি শ্রেণিকক্ষ। শিক্ষকদের কর্মবিরতির কারণে শূন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলাভবনের একটি শ্রেণিকক্ষ।
টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল করার বিরোধিতা করছিলেন তারা। পাশাপাশি জ্যেষ্ঠ সচিবদের সমান গ্রেডে উন্নীত না হওয়ার সুযোগ না থাকাকে মর্যাদাহানি হিসেবে দেখছিলেন তারা।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর সভাপতি অধ্যাপক ফরিদউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “উনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। উনি বলেছেন, উনি নিজে বিষয়টা দেখবেন।”
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ কামাল বলেছিলেন, “বৈঠকে আমাদের সকল দাবি পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে উনার (প্রধানমন্ত্রী) কাছে উপস্থাপন করেছি। উনি বলেছেন, যাতে দ্রুত সমাধান হয়, সেজন্য বিষয়টি তিনি নিজে দেখবেন।”
প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন-তৃতীয় গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেড পর্যন্ত পদোন্নতির সোপান তৈরি করা হবে, অন্যান্য দাবি ‘যথাযথ’ বিবেচনা করা হবে।”
শিক্ষকদের আপত্তির পর বেতন কাঠামো পর্যালোচনায় একটি কমিটি গঠন করে সরকার। কমিটির সভাপতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠকও করেন।
বৈঠকে অর্থমন্ত্রী শিক্ষকদের তিনটি দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্র“তি দিলেও ১০ দিন পর প্রকাশিত গেজেটে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি, অভিযোগ শিক্ষকদের।
এরপর ১১ জানুয়ারি থেকে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করে ৩৭ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিগুলোর জোট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।