Sun. May 4th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

3খোলা বাজার২৪, সোমবার, ২৫ জানুয়ারি ২০১৬ : সরকারের অনুমোদন পাওয়ার পর আদালতে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অভিযোগ দাখিল করেছেন এক আইনজীবী।
আবেদনকারী আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন মেহেদীর অভিযোগ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে খালেদা জিয়া যে মন্তব্য করেছেন, তা রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল।
সোমবার সকালে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে উপস্থিত হয়ে মামলাটি আমলে নেওয়ার আবেদন করার কথা জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক মোমতাজ উদ্দিন মেহেদী, যিনি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য।
বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিরও আবেদন করা হয়েছে মেহেদীর আর্জিতে।
বেলা ১১টার পর মহানগর হাকিম রাশেদ তালুকদারের আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশের আইনে যে কোনো বিচারপ্রার্থী আদালতে গিয়ে অভিযোগ জানিয়ে প্রতিকার চাইতে পারেন। তবে কারও বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করতে চাইলে সেক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতির প্রয়োজন হয়।
মেহেদীকে সেই অনুমতি দেওয়ার কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল রোববার সাংবাদিকদের বলেন, “এ সংক্রান্ত একটি চিঠি আমাদের কাছে এসেছিল। আমরা একটা গাইডলাইন দিয়েছি। এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মামলা হলে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হবে কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানীতে একটি আলোচনা সভায় খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, “আজকে বলা হয় এত লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে আসলে কত লক্ষ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানা রকম তথ্য আছে।”
ওই বক্তব্যে ‘দেশদ্রোহী’ মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে অভিযোগ করে গত ২৩ ডিসেম্বর তা প্রত্যাহার করতে উকিল নোটিশ পাঠান আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবী নেতা মেহেদী।
ওই নোটিসে খালেদাকে জাতির কাছে ‘নিঃশর্ত ক্ষমা’ চেয়ে সাত দিনের মধ্যে বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিতে বলা হয়।
নোটিসের জবাব না পেয়ে গত সপ্তাহে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মামলা দায়েরের অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেন মেহেদী। এর ধারাবাহিকতায় গত ২১ জানুয়ারি অনুমোদন মেলে।
রোববার তিনি বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৩(ক), ১২৪(ক), ৫০৫ ধারার খালেদার ‘অপরাধ’ আমলে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেছেন তিনি।
অবশ্য বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেনের দাবি, খালেদার ওই রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের ‘সংজ্ঞায় পড়ে না’। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনের দিকটি খতিয়ে না দেখে ‘আবেগের বশে’ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
“এটি ভুল ধারণার ওপর করা হয়েছেৃএবং সরকারও আবেগের বশবর্তী হয়ে এই মামলা করার অনুমতি দিয়েছেন আইনের বিধান মোতাবেক। এটি সঠিক হয় নাই।”
খন্দকার মাহবুব দাবি করেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সঠিক তথ্য সরকারি পর্যায়ে না থাকায় তাদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না।
“আমি মনে করি, এটা তার (খালেদা) অত্যন্ত সময়পোযোগী বক্তব্য, কেননা দীর্ঘ ৪২ বছরেও আমরা শুধু মুখের কথা বলি ৩০ লাখ শহীদ হয়েছেন, কিন্তু তাদের সঠিক ঠিকানা-তথ্য আমাদের কাছে নাই, এটি একটি জাতির জন্য দুর্ভাগ্য, আমাদের জন্য লজ্জাকর।”