Sat. Jun 21st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

17খোলা বাজার২৪বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: সেমিফাইনালের চাপটাই কী চেপে ধরল বাংলাদেশকে? প্রথমে দুই ওপেনার ফিরলেন তড়িঘড়ি করে। এরপর নাজমুল হোসেন শান্তও পারলেন না শান্ত হয়ে ব্যাট করতে। একমাত্র ব্যতিক্রম হয়ে একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন জয়রাজ শেখ। কিন্তু জয়রাজও যোগ দিলেন আত্মহত্যার মিছিলে। একটু পরে ফিরলেন কোয়ার্টার ফাইনালের নায়ক জাকির হাসান। ১১৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ইতিহাস গড়ার ম্যাচে মহা বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ দল। আপাতত অধিনায়ক মেহেদী মিরাজ প্রতিরোধের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সামনে থেকে।
গতকাল মিজারই জোর গলায় বলেছেন বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল-টাইনাল এসব মাথাতেই রাখছেন না। এটিকে নিচ্ছেন স্রেফ আরেকটি ম্যাচ হিসেবে। কিন্তু সব ধরনের খেলাতেই যেকোনো ধরনের বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে সেমিফাইনালে খেলার চাপ অগ্রাহ্য করা কি আদৌ সম্ভব? বাংলাদেশের যুবারা চাপ নিয়েই খেলছে। স্বাভাবিক খেলাটা দেখা যায়নি এখনো। সেই চাপের ফলেই আত্মহত্যার মিছিলে যোগ দিলেন সবাই। এই প্রতিবেদন লেখার সময় বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩৮ ওভার শেষে স্কোর ৫ উইকেটে ১৫৬। মিরাজ অপরাজিত আছেন ৩৮ রানে।
এই ওয়েস্ট ইন্ডিজকেই যুব বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ ৩-০-তে হোয়াইটওয়াশ করেছিল। জিম্বাবুয়ের কাছে হারতে হারতে ‘বিতর্কিত’ আউটে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে আসা ক্যারিবীয় যুবারা কিন্তু শেষ আটে হারিয়েছে পাকিস্তানের মতো দলকে। বেশ আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছে তাদের। তবে ক্যারিবীয় যুবাদের আত্মবিশ্বাসের চেয়েও বাংলাদেশকে কোণঠাসা করে রেখেছে আসলে চাপ। ফাইনালে ওঠার তীব্র আকাক্সক্ষা।
সেই চাপের কাছেই হার মেনে দ্বিতীয় ওভারেই ফিরেছেন পিনাক ঘোষ (০)। ১০ রানে প্রথম উইকেটের পতন। মজার ব্যাপার হলো, এই দশের নয়ই এসেছে অতিরিক্ত খাতে। স্কোরবোর্ডে ৯ রান জমা হয়ে গেলেও তখনো দুই ওপেনার রানের খাতা খোলেননি। ক্যারিবীয় বোলাররাও যে চাপে ছিল, সেটাও বোঝা যায় এখান থেকে। কিন্তু দ্রুতই তারা চাপটা বাংলাদেশের যুবাদের ওপরে চালান করে দিয়েছে।
সপ্তম ওভারের প্রথম বলে ফিরেছেন অন্য ওপেনার সাইফ হাসানও (১০)। আর নাজমুল ফিরলেন ১৩তম ওভারের শেষ বলে। ৫৪ বলে ৩৫ করা জয়রাজই পথ দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু নিরীহ গোছের একটি বল থার্ড ম্যানে ঠেলতে গিয়ে লাগল ব্যাটের ভেতরের কানায়। সোজা গিয়ে লাগল স্টাম্পে। বোল্ড!
এরপর জুটি গড়লেন কোয়ার্টার ফাইনালের দুই নায়ক জাকির ও মিরাজ। যখনই মনে হচ্ছিল, ধাক্কাটা সামলে উঠবে বাংলাদেশ তখনই স্টাম্পের বল কোনাকুনি খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে গেলেন জাকির। ৪৪ বলে ২৪ করা জাকির ফিরে যাওয়াই বাংলাদেশের জন্য এখন ২০০ করাটাও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ক্যারিবীয়দের মূল শক্তি পেস বোলিং। আজ শুরু থেকে ঢাকা কুয়াশায় ঢাকা। পেসারদের জন্য এমন আদর্শ পরিবেশেও টসে জিতে মিরাজ কেন ব্যাটিংই নিলেন—এ নিয়ে কারও মনে প্রশ্ন থাকতে পারে। তবে সেমিফাইনালের মতো ম্যাচে রান তাড়া করা সব সময়ই চাপের—এমন ভাবনাও থাকতে পারে।
তিন ম্যাচের ওই সিরিজটাই বলে দিচ্ছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিংটা বড় দুর্বল। বিশেষ করে বাংলাদেশের স্পিনটা একেবারেই খেলতেই পারে না তারা। আর তাই নির্ভয়ে ব্যাট করাটাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি। উইকেটে শেষ দুই পরীক্ষিত ব্যাটসম্যান। এঁদের ওপরই নির্ভর করছে, স্পিনারদের লড়াই করার জন্য যথেষ্ট পুঁজি পাবে কি না বাংলাদেশ।