খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: গাছে গাছে শিমুল ফুল, আমের বনে মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ, ঝরাপাতার নিক্কন শব্দ আর কোকিলের কুহু কুহু ডাক, উত্তরীয় হাওয়া বদলে গিয়ে বইতে শুরু করেছে দক্ষিণী হাওয়া এসবই জানা দিচ্ছি ঋতু রাজ বসন্তের আগমনী বার্তা। বাংলা বঙ্গাব্দের শেষ দুই মাস ফাল্গুন ও চৈত্রের মিলনে ঘটতে চলেছে ঋতুরাজ বসন্তের আগমন। দিনটি এলেই বাঙালি মনে জেগে উঠে উৎসের আনন্দ। তাইতো কবিগুরু যথার্থ বলেছেন, ‘আহা আজি এ বসন্তে এতো ফুল ফোটে। এতো বাঁশি বাজেৃপাখি গায়।’
বসন্তের প্রথমদিনটি পালনে তাই প্রেমিক-প্রেমিকা সহ নাগরিক জীবনে বসন্ত বরণে নানা আয়োজন করা হয়। এর যুক্ত হয়েছে ১৪ ফেব্র“য়ারি ভালোবাসা দিবস ও মহান ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিময় ২১শে ফেব্র“য়ারি।
বসন্তের প্রথম দিনটি উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর নিউমার্কেট, গাওছিয়ায় সুপার মার্কেট সহ আশপাশের প্রায় সবগুলো মার্কেটে দেখাগেছে, বিভিন্ন বয়সীদের উপচেপড়া ভিড়। এসময় বিক্রেতা ও ক্রেতাদের দেখা গেছে খুবই ব্যস্ত। কারোরই কথা বলার একটুখানি ফুরসত নেই।
শাড়ির বেচাকেনা কেমন চলছে? জানতে চাইলে অন্তরা ফেব্রিক্স লিঃ দোকানী রনি জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর কিছুটা বেচাকেনা ভালো। তবে বিকালের দিকটায় বেচাকেনা আরো বাড়বে বলে আশা করছি।
রামপুরা থেকে আসা বিথি, সাজিয়া, কনা জানালেন, তারা নিজেদের জন্য বাসন্তি রঙের শাড়ি কিনেছে, শাড়ির রঙ মিলিয়ে ফুল ও ফুলের মালা কিনবেন শাহবাগ থেকে।
এদিকে শাহবাগের ফুল দোকানগুলোতে গিয়ে দেখাগেছে, অন্য যেকোনে সময়ের চেয়ে ফুলের বিক্রি ও দাম দুটোই বেড়েছে। ফাল্গুনের প্রথম দিনটি সব বয়সী মানুষের হাতে শোভা পায় দেশি-বিদেশি নানা ফুল। ফুল বিক্রেতা স্বপ্ন জানান, বসন্ত বরণ ও ভালোবাসা দিবসে ফুলের বাড়তি চাহিদা থাকায় আগেই অর্ডার করেছেন। কিছু ফুল ইতোমধ্যে পৌঁছে গেছে, বাকিগুলো রাতেই আসবে। তিনি আরো জানান, ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে খুচরা বিক্রেতারা তাদের কাছ থেকে আজ সারা দিনই নানা রঙের ফুল ও ফুলের মালা কিনে নিয়েছেন।
কোন ফুলের চাহিদা বেশি জানতে চাইলে স্বপ্ন জানান, বসন্ত আর ভালোবাসা দিবসে সাধারণত চাহিদা বেশি থাকে হলুদ গাঁদা ফুল আর লাল রঙের ফুলের। তাই তো কবি বলেছেন, হলুদ গাঁদার ফুল, রাঙা পলাশ ফুল, এনে দে এনে দে হাট থেকে মাঠ থেকে, নইলে বাঁধব না বাঁধব না চুল।
ফাল্গন ও বসন্ত উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন পৃথক পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে, শোভাযাত্রা, আবৃত্তি, সংগীত, নৃত্য যন্ত্র সংগীত, ঢোল বাদন। অনুষ্ঠানগুলো সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে আয়োজনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।