Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

44kখোলা বাজার২৪,সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের সরকার বিদেশি শ্রমিক নেওয়া স্থগিতের ঘোষণা দিলেও তাতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার চুক্তিতে প্রভাব পড়বে না।
ঢাকায় ওই চুক্তি সইয়ের পরদিন মালয়েশিয়ার উল্টোপথে হাঁটা নিয়ে নানা নাটকীয়তার পর শনিবার দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এই বিবৃতি আসে বলে স্টার অনলাইনের খবর।
অবশ্য সমঝোতা অনুযায়ী মালয়েশিয়া সরকার তাদের পাঁচটি খাতের জন্য এখনই বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেবে কি না- তা ওই বিবৃতিতে স্পষ্ট করা হয়নি।
মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী রিচার্ড রায়ত জায়েম ওই বিবৃতিতে বলেন, দেশটির উপ প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদি সব ‘সোর্স কান্ট্রি’ থেকে জনশক্তি আমদানি স্থগিতের যে ঘোষণা দিয়েছেন, তাকে তিনি স্বাগত জানান, কেননা এর মধ্য দিয়ে স্থানীয় শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
“তবে, ওই ঘোষণা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের বৈধতায় কোনো প্রভাব ফেলবে না।”
বিদেশি শ্রমিক নেওয়া স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের বিষয়ে সরকার শিগগিরই ‘বিস্তারিত জানাবে’ বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
মালয়েশিয়ার মন্ত্রী রিচার্ড রায়ত এবং বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় ওই সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
ওই চুক্তির আওতায় মালয়েশিয়া তাদের পাঁচটি খাতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সমন্বয়ে ‘জিটুজি প্লাস’ পদ্ধতিতে ১৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী নেবে বলে অনুষ্ঠানের পর জানানো হয়।
কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই শুক্রবার সকালে মালয়েশিয়ার উপ প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদি বাংলাদেশসহ সব ‘সোর্স কান্ট্রি’ থেকে জনশক্তি আমদানি স্থগিতের ঘোষণা দেন, যা নিয়ে দুই দেশেই শুরু হয় তুমুল আলোচনা।
জাহিদ হামিদি বলেন, “কতো শ্রমিক আমাদের প্রয়োজন সে বিষয়ে সরকার সন্তোষজনক তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত বিদেশি কর্মী নেওয়া স্থগিত থাকবে।”
গণমাধ্যমে ওই খবর আসার পর যোগাযোগ করা হলে মালয়েশিয়ার সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করেন বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তারা।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ বলেন, “মন্ত্রী পর্যায়ে একটা রাষ্ট্রীয় চুক্তি হয়েছে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ডকুমেন্ট। আমরা যখন এটাতে প্রবেশ করি, তখন ওখান থেকে সেটার অবসায়নেরও একটা প্রক্রিয়া আছে। সেটাও আমাদের সামনে আসেনি।”
এসব বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকার বা দেশটিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও লেবার কাউন্সিলরও ঢাকায় কিছু জানাননি বলে অতিরিক্ত সচিব জানান।
তিনি বলেন, “রাষ্ট্রীয় চুক্তি অবসায়ন করতে চাইলে তার প্রক্রিয়া আছে। তারা তো চুক্তি অবসায়ন করতে কোনো প্রক্রিয়ায় যায়নি। চুক্তি অবসায়নে আমাদেরও কিছু বলেনি, তাই এখনও ওই চুক্তি বহাল আছে।”
ওই ঘোষণা নিয়ে মালয়েশিয়াতেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া হয়। বাংলাদেশি শ্রমিক নেওয়ার উদ্যোগের বিরোধিতা করে আসা ট্রেডস ইউনিয়ন কংগ্রেস সরকারের ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও মালয়েশিয়ার এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন, ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারার্স, সারাওয়াক অয়েল পাম প্ল্যান্টেশন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ চাকরিদাতাদের বিভিন্ন সংগঠন ওই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানায়।
তাদের যুক্তি ছিল, যে প্রতিষ্ঠান সরকারের সবুজ সংকেত পেয়ে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল, তারা স্থগিতাদেশের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।