খোলা বাজার২৪, সোমবার, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ : পঞ্চগড়ের পুরোহিত অধ্যক্ষ যজ্ঞেশ্বর চন্দ্র রায়কে জেএমবি সদস্য রমজান আলী খুন করেছে । পুলিশ জানায়, জেলার দেবীধস উপজেলার সোনাপোতা গ্রামস্থ শ্রী শ্রী সন্ত গৌড়ীয় মঠের পুরোহিত অধ্যক্ষ যজ্ঞেশ্বর চন্দ্র রায়ের হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত খুনি রমজান আলীকে তারা ইতোমধ্যে গ্রেফতার করেছে। সে উপজেলার দন্ডপাল ইউনিয়নের কালীগঞ্জ মসজিদ পাড়ার বাসিন্দা। এছাড়া পুলিশ দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদীঘি ইউনিয়নের কালীরডাঙ্গা সোটাপাড়া গ্রামের ভ্যানচালক হারেজ আলী (৩৫) ও আলমগীর হোসেন (৩২)কে গ্রেফতার করে। আলমগীর উপজেলা সদরের কামাতপাড়া রফিকুল ইসলামের ছেলে। রিমান্ডে থাকা আসামীদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে পঞ্চগড় ও নীলফামারী থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয় ।
শুক্রবার পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হুমায়ুন কবির জানান, প্রত্যক্ষভাবে অধ্যক্ষ পরোহিত হত্যায় অংশ গ্রহণকারী পাঁচজনের মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া এ হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে মূল খুনি রমজান আলী রয়েছে। তার বাসায় হত্যাকান্ডের আগে ও পরে যে অস্ত্র রাখা হয়েছিল তা দিয়ে পুরোহিতকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশ জানায়। ঘটনার সময় মঠের আশেপাশে সাইকেল নিয়ে নজরদারিতে ছিল এমন ব্যক্তিকেও গ্রেফতার করা হয়। রিমান্ডে দেয়া আসামীদের স্বীকারোক্তির উদ্ধৃতি দিয়ে ডিআইজি হুমায়ুন কবির জানান, রমজান আলী ঘটনার তিনদিন আগে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো আলমগীরের বাসায় রাখে। ঘটনার আগের দিন অস্ত্রগুলো হারেজের গোয়ালঘরে নিয়ে রাখা হয়। ওই দিন রজমানসহ আরেকজন হারেজের বাসায় রাত যাপন করে। ঘটনার দিন ফজরের নামাজ শেষে তারা মঠে যায়। প্রথমেই রমজানই অধ্যক্ষকে চাপাতি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। সেই যজ্ঞেশ্বরের মূল খুনি। এর পর খুনিরা কালীগঞ্জ বাজারে অপেক্ষায় থাকা হারেজের কাছে অস্ত্রগুলো বুঝিয়ে দিয়ে চলে যায়।
ডিআইজি জানান, রমজান, হারেজ ও আলমগীর দীর্ঘদিন ধরে জেএমবির সঙ্গে জড়িত রয়েছে। উল্লেখ্য, গত ২১ ফ্রেব্র“য়ারি দেবীগঞ্জ উপজেলা সদরের করতোয়া নদীর পশ্চিমপাড়ে সন্ত গৌড়ীয় মঠে গিয়ে দুর্বৃৃত্তরা মঠের অধ্যক্ষ যজ্ঞেশ্বর চন্দ্র রায়কে (৫০) চাপাতি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। এ সময় মঠের সেবায়েত গোপাল চন্দ্রকে গুলি করে তারা পালিয়ে যায়। যজ্ঞেশ্বরের বড় ভাই রবীন্দ্রনাথ হত্যার ঘটনায় একটিএবং দেবীগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক মজিবর রহমান অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে আরেকটি মামলা করেন। ঘটনার দিন রাতেই পুলিশ দুই মামলায় খলিলুর রহমান (৫৫), বাবুল হোসেন (২৮) ও জাহাঙ্গীর হোসেনকে (৩০) গ্রেফতার করে। গত মঙ্গলবার তাদের ১৫ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দেবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক মো. আইয়ুব আলী বলেন, দুটি মামলায় গ্রেপ্তারকৃত ছয় আসামি বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে রয়েছে। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে।