Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

7kখোলা বাজার২৪, বুধবার, ৯ মার্চ ২০১৬ : মানসিক ভারসাম্য হারিয়েই দুই শিশুকে গলাটিপে হত্যা করে মা মাহফুজা। গত রোববার রাতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এক চিকিৎসক মাহফুজাকে কাউন্সিলিং এবং জিজ্ঞাসাবাদ শেষে প্রাথমিকভাবে এ কথা জানান গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের।
তিনি জানান, মানসিক রোগ থেকেই এ হত্যা হতে পারে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি ছিলেন খুবই স্বাভাবিক। তিনি যে তার দুই শিশুকে হত্যা করেছেন তা নিয়ে তার মধ্যে কোনো প্রকার অনুশোচনা নেই। তিনি চিন্তিতও নন। কোনো মা যদি তার নিজ দুই শিশুকে এভাবে হত্যা করে তাহলে সেই মায়ের কোনোভাবেই স্বাভাবিক থাকার কথা নয়। এ থেকে অনুমেয় মাহফুজা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন।
এদিকে, মাহফুজার গ্রামের বাড়ি জামালপুরে অবস্থানরত পুলিশের টিম জানিয়েছে, মাহফুজার মাও কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনিও এ রোগে বেশ কিছুদিন ধরে ভুগছেন। এ ব্যাপারে আরও তথ্যের জন্য তারা আশপাশের লোকজন তথা এলাকার মুরব্বি পাড়া-প্রতিবেশীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন।
অন্যদিকে, গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, মাহফুজার এ রোগটি বংশগতও হতে পারে। তার মায়ের শরীরের যে জীন তা তার শরীরে থাকাটাই অস্বাভাবিক নয়। বংশ পরম্পরানুযায়ী মাহফুজাও মানসিক রোগী। প্রয়োজনে তার মা-বাবাকেও ঢাকায় আনা হবে এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের দিয়ে কাউন্সিলিংয়ের পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র বলেছে, নিহত দুই শিশুর মা গত ২ মাস ধরে তার ছেলে-মেয়েদের স্কুলে নিয়ে যেত না। এমনকি বাসা থেকেও তিনি বের হতেন না। এ অবস্থায় তার মেজ বোন তাদের স্কুলে নিয়ে যেত। কারণ জানুয়ারি মাসে তাদের এক পারিবারিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেকেই মাহফুজাকে তার ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনা নিয়ে জানতে চায়। এ সময় অনেকেই মাহফুজাকে বলেন, তোমার ছেলে-মেয়েদের আরও মনোযোগী হতে বলো। বেশি বেশি পড়াশুনা না করলে ওরা তো মানুষ হবে না। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে এমন মন্তব্যে ভেঙে পড়েন মাহফুজা। এরপর একদিন অলভীর স্কুলের সামনে অপেক্ষা করা অভিভাবকদের সঙ্গে মাহফুজার কথা হলে সেখানেও উঠে আসে একই কথা। এরপর মাহফুজা তার সন্তানদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন।
উল্লেখ্য, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বনশ্রীতে খুন হয় নুসরাত আমান অরনী ও অলভী আমান নামের দুই শিশু। এ ঘটনায় তাদের মাকে আসামি করে বাবা আমান উল্লাহ থানায় মামলা করেছেন। পরে মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় রামপুরা থানার পুলিশের পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমানকে। এরপর মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়ার নির্দেশে গোয়েন্দা পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।