খোলা বাজার২৪, শনিবার, ১২ মার্চ ২০১৬ : সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান’ হিসেবে তারেক রহমানের কাজ সুনির্দিষ্ট করতে বিএনপির গঠনতন্ত্র সংশোধন হচ্ছে।
কাউন্সিলের আগে শনিবার এক আলোচনা সভায় বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এই সংশোধনী প্রস্তাবের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানান।
চেয়ারপারসনের পদে মা খালেদা জিয়ার পাশাপাশি জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান পদে তারেক ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আগামী ১৯ মার্চ কাউন্সিল অধিবেশনে তা অনুমোদন পাবে বলে দলের নেতারা জানিয়েছেন।
বিভিন্ন মামলায় হুলিয়া নিয়ে লন্ডনে অবস্থানের মধ্যে গত কাউন্সিলে জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তারেক। সেবারই পদটি সৃষ্টি করা হয়েছিল, এবার তিনি পুনর্র্নিবাচিত হলেন।
এক দশক আগে মহাসচিবের পর জ্যেষ্ঠ যুগ্মমহাসচিবের একটি পদ সৃষ্টি করে রাজনীতিতে আনা হয়েছিল জিয়া-খালেদার বড় ছেলে তারেককে।
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় যুবদলের উদ্যোগে তারেকের সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিলের আগে বক্তব্যে গঠনতন্ত্রে সংশোধনী প্রস্তাবের বিষয়ে বলেন গয়েশ্বর।
তিনি বলেন, “আমরা নিজেরাই কিন্তু সাংগঠনিকভাবে তারেক রহমানকে অনেকটা নিষ্ক্রিয় করে রেখেছি। সঠিকভাবে তার কাছে কোনো দায়িত্ব নাই।”
বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালন করবেন।
“চেয়ারপারসন যতক্ষণ উপস্থিত থাকবেন, তারেক রহমান নিষ্ক্রিয় থাকবেন,” উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, তারা এখন জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যানের পদের দায়িত্ব আরও বিস্তৃত করতে চান।
“যেমন যুগ্ম মহাসচিব যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সার্বক্ষণিক দপ্তরের দায়িত্ব পালন করেন। তেমনি স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে আমাদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ থাকে না, পার্টির চেয়ারম্যান যখন নির্দেশ দেন, সেখানে কাজ করতে পারি।”
“আমরা জানি না, তারেক রহমানের দায়িত্ব কী? তিনি কথা বলতে চেষ্টা করেন। সেই কথা বলাটাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেই কারণেই তারেক রহমানকে সুনির্দিষ্টভাবে দায়িত্ব দেওয়া প্রয়োজন।”
দলীয় চেয়ারপাসনের কাছে এই প্রস্তাব দেবেন জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, “তাহলে নেতা-কর্মীরা জানতে পারবেন, এই দায়িত্বটা উনার (তারেক) উপর আছে, তারা সেভাবে যোগাযোগ করে কথা বলে সে সেভাবে কাজ করতে পারবেন।”
বিএনপির রাজনীতিতে তারেকের গুরুত্ব তুলে ধরে যুবদলের সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, “তিনি (তারেক) রাজনীতি সঙ্গে ২৪ বছর যাবত জড়িত। প্রাথমিকভাবে তিনি পর্দার অন্তরালে অতিমাত্রায় সক্রিয় ছিলেন।
“১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি বিএনপিকে পুনর্র্নিবাচিত করার ক্ষেত্রে একাডেমিক কাজ থেকে শুরু করে তথ্য প্রযুক্তির সমন্বয়ে রিসার্চ সেলের মতো করে ২০০১ সালে একটি ভূমিকা রাখেন। পরবর্তীকালে ২০০১ সালে সক্রিয়ভাবে তিনি জনগণের সামনে আসেন রাজনীতিতে।”
তারেকের কারণে তৃণমূলে বিএনপি শক্তিশালী হওয়ায় প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল তাকে ‘কলঙ্কিত’ করার চেষ্টা করছে বলেও দাবি করেন গয়েশ্বর।
কাউন্সিলের জন্য সবাইকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তিনি বলেন, “কাউন্সিলের সময়ে ছবি তোলা, নেতাদের সামনে পড়ার চেষ্টা করবেন না। এই কাউন্সিলটা নেতা বানানোর জন্য নয়, এটা বিএনপির আগামী দিনে ঘুরে দাঁড়ানোর কর্মকৌশল ঠিক করবে।”
আলোচনায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুস সালাম আজাদ, বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনিও বক্তব্য রাখেন।