খোলা বাজার২৪, সোমবার, ২১ মার্চ ২০১৬ : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, ‘হাসিনা বিহীন’ নির্বাচনের কথা বলে বেগম জিয়া দেশে আবার ২১ আগস্টের মত নতুন কোন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, শনিবার বিএনপি’র কাউন্সিলে ‘হাসিনা বিহীন নির্বাচন বলতে খালেদা জিয়া কি বোঝাতে চাচ্ছেন? ২১ আগস্টের মতো আবার গ্রেনেড হামলা বা কোন কিছু করে হত্যার পরিকল্পনা করছেন কিনা? সেটাই হচ্ছে আমার প্রশ্ন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবারো তাদের কনফারেন্স হলো, পত্রিকায় পড়লাম যে তিনি হাসিনা বিহীন নির্বাচন করবেন। তার মানে তিনি আরো কিছু একটা ষড়যন্ত্রের ঘোট পাকাচ্ছেন। কারণ আর তো কোন পথ তার জানা নেই। তিনি সব সময় একটা পথই দেখেন।’ তিনি বলেন, ‘চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র ছাড়া খালেদা জিয়া এবং বিএনপি কিছুই বোঝে না।’
রবিবার সন্ধ্যায় গণভবনে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সভাপত্বিকালে এক প্রারম্ভিক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি এ কথা জানান। তিনি আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের তারিখ পুনঃনির্ধারণ করার ঘোষণা দিয়েছেন । তিনি কাউন্সিল পেছানোর জন্য সারাদেশ জুড়ে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। বৈঠকে ২৮ মার্চ থেকে পিছিয়ে সম্মেলনের নতুন তারিখ নির্ধারণের জন্য আলোচনা চলছিল ।
সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সভা শুরু হয়। সভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘২৮ মার্চ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শুরু হতে যাচ্ছে। আমাদের সম্মেলনে যারা কাউন্সিলর, ডেলিগেট আসেন, তারা তৃণমূল থেকে আসেন। নির্বাচন চলাকালে সম্মেলন হলে তারা আসতে পারবেন না। তাই, নির্বাচন চলাকালে একটি বড়ো গ্যাপ দেখে এই সম্মেলনের তারিখ পুনঃনির্ধারণ করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘সম্মেলনই একটা সময়, যখন সকলে মিলে আসে।
তাই সেই সুযোগটা তাদের দিতে হবে। তাই তারিখটা আমাদের একটু অ্যাডজাস্ট করতে হবে।’ পরিবর্তিত তারিখ এই সভায় আলোচনা করে নির্ধারণ করা হবে বলেও তিনি জানান। তিনি সভায় বিএনপি’র সন্ত্রাস ও বেগম জিয়ার নির্দেশনায় পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার রাজনীতির তীব্র সমালোচনা করেন। বিগত সময়ে বহুবার হত্যার চেষ্টা হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘রাখে আল্লাহ মারে কে? শকুনের দোয়ায় গরু মরে না।
তারা বহুবার চেষ্টা করেছে, আল্লাহ বাঁচিয়েছেন। আল্লাহ আমাকে কাজ দিয়েছেন।’ প্রধানমন্ত্রী, ‘যতক্ষণ আমার কাজ শেষ না হবে, ততক্ষণ আল্লাহই আমাকে হেফাজত করবেন। দেশবাসীর দোয়া আছে। নিশ্চয়ই দেশবাসীর কল্যাণের জন্য আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার আগে খালেদা জিয়ার বক্তব্য বা তাদের দলের নেতাদের বক্তব্য একটু স্মরণ করলে দেখবেন, তখনও তারা এমন কথা বলেছে, যে পথে আমার বাপ গেছে সে পথে আমিও যাবো।’
‘অর্থাৎ ১৫ আগস্ট আমার বাবাকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেভাবে আমাকে হত্যা করা হবে। আমাকে ওই ভাবে বিদায় দিবে। আর রাজনীতি করতে পারবো না।’ তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া এ বক্তব্য দিয়েছিলেন যে, আমি প্রধানমন্ত্রী তো দূরে থাক বিরোধীদলের নেতাও হতে পারব না। অর্থাৎ আমার অস্তিত্বই থাকবে না, এটাই তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন। তারপরেই ২১ শে আগস্টের ঘটনা। কাজেই এটা দেশবাসীকে একটু স্মরণ করাতে চাই।
এই যে তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে সে কি বোঝাতে চেয়েছিলো। তারপর ওই তার অ্যাকশন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যার চেষ্টা।’ এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরো উল্লেখ করেন, ‘২০০৪ সাল না তার আরো পিছনে যেতে চাই। কোটালিপাড়ায় আমি যখন সভা করতে গেলাম, সেখানে ৭৪ কেজি একটা এবং ৭৬ কেজি আরেকটি বোমা উদ্ধার করা হয়। সেখানে এসব উদ্ধার হওয়ার কথা না। ঘটনা চক্রে চা দোকানদার তা সন্ধান পায়। ঠিক তার আগে ঐ একই ধরনের বক্তব্য তারা দিয়েছিলো।’