খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২৩ মার্চ ২০১৬ : ভারতের মহারাষ্ট্রের ওয়াশিম শহরের বাসিন্দা মান্দা। তার স্বামী মুকুন্দ ২০০৯ সালে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। ঠিক ৩ বছর পরে ২০১২ সালে আবার সফল হন তিনি এ পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে। অর্চনা বুরারিও তার স্বামীকে হারিয়েছেন ২০১৪ সালে। ছোট্ট ছেলেটাকে নিয়ে এখন বৃদ্ধ মা-বাবার সংসারেই থাকেন তিনি। মান্দা ও অর্চনার স্বামী দু’জনেই আত্মহত্যা করেন ফসল ফলাতে ব্যর্থ হয়ে।
মহারাষ্ট্র রাজ্যের ওয়াশিম শহরে অনেক খামারি-ই ঋণের বোঝা বইতে না পেরে এমন আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। মুকুন্দ বিভিন্ন লোকের কাছে ৬০ হাজার রুপি ধার করেন ফসল ফলানোর জন্য কিন্তু তাতে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা করেন। অর্চনার স্বামীও ৪৫ হাজার রুপি ধারের বোঝা নিয়ে আত্মহত্যা করেন। এখন দুইজন বিধাবা-ই চরম বাস্তবতায় সংসারের ঘানি টানছেন।
মহারাষ্ট্রে ২০০৪ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর গড়ে ৩ হাজার কৃষক আত্মহত্যা করেছে। গত বছর ২০১৫ সালে আত্মহত্যা করে ৩২২৮ জন কৃষক। রাজ্যের ১১ টি জেলায় আবহাওয়ার চরম ক্ষতিকর প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে। শস্য উৎপাদনে বেশি খরচ এবং পণ্যের বাজারদর কম হওয়ার কারণে অধিকাংশ কৃষক টিকতে পারছে না।
ওয়াশিম শহরের বিধবা পল্লীতে এরকম হাজার হাজার বিধবারা বাস করেন যাদের স্বামী কৃষি কাজের কাছে হেরে গিয়ে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে সামান্য সাহায্য দিলেও তা তেমন কোন কাজে আসেনি তাদের। স্বামীর করা ঋণের বোঝা-ই টানতে হচ্ছে এসব হতভাগিনী বিধবাদের। এক বিধবা বিবিসি’র সাংবাদিককে বলেন, ‘আরও ১০ বছর পর আসেন, তাহলে আরও কয়েকগুণ বেশি বিধবা দেখতে পাবেন।’