Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

1kখোলা বাজার২৪,বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ ২০১৬:ঢাকা-চট্টগ্রাম চারলেনের মহাসড়কের পাশে আরেকটি এক্সপ্রেসওয়ে বা নতুন সড়ক নির্মাণের বিষয়ে ব্যবহারকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে প্রকল্পের কর্মকর্তারা। এই এক্সপ্রেসওয়েতে প্রতি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারবে গাড়ি। দু-আড়াই ঘণ্টায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাতায়াত করা যাবে।
আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওই মতবিনিময় সভায় এসব কথা জানানো হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা হলো সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
মতবিনিময় সভায় ঢাকা-চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রস্তাবিত এলাইনম্যান্ট এবং নকশা সম্পর্কিত এক মতবিনিময় সভায় প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শিশির কান্তি রাউত। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার রুহুল আমিন, বিশেষ অতিথি হিসেবে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মাহবুবুল আলম, ঢাকা-চিটাগাং এক্সপ্রেসওয়ের পিপিপি ডিজাইন প্রকল্পের ‘টিম লিডার’ গেভিন স্ট্রাড, চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, চট্টগ্রাম বন্দর, রেল, পিডিবিসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
শিশির কান্তি রাউত বলেন, পুরো সড়কটির চট্টগ্রাম-ফেনী ও দাউদকান্দি-ঢাকা অংশে কোথাও মাটির ওপর আবার কোথাও উড়ালসড়ক তৈরি করা হবে। ফেনী ও দাউদকান্দির অংশে কেবল মাটির ওপর সড়ক তৈরির পরিকল্পনা আছে। পুরো সড়কটি উড়াল হলে বাস্তবায়নে ৬৭ হাজার ২৫২ কোটি টাকা এবং আংশিক উড়াল ও মাটিতে হলে ২৬ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা খরচ হবে। আর প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সময় লাগবে চার বছর।
প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে শিশির কান্তি রাউত সভায় আরও জানান, ২০২০ সালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহনের চাপ সামলাতে চারলেনের পাশে ২১৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য নতুন সড়কটি নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এই সড়ক নির্মাণ হলে কেউ রাস্তা পারাপার হতে পারবে না। কারণ, দুদিকে বেষ্টনী থাকবে। তাই এই সড়কে ৬৪টি আন্ডারপাস (পাতাল পথ), প্রায় ১৪৫টি পদ সেতু, সাতটি ইন্টারচেঞ্জ (মূল সড়ক থেকে পার্শ্ববর্তী সড়কে যাওয়ার জন্য র‍্যাম্প) ও ১০ লেনের টোলপ্লাজা রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন বাজার ও বিভিন্ন সংযোগ সড়কের অংশে যানজট এড়ানোর জন্য ১৮ কিলোমিটার উড়ালসড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা আছে বলে জানানো হয়।
সভায় শিশির কান্তি রাউত জানান, প্রস্তাবিত এ এলাইমেন্টে দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেক কমে যাবে। প্রতি ঘণ্টায় গাড়ি ১০০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারবে। ফলে দু-আড়াই ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে যাতায়াত করা যাবে। আর পুরো মহাসড়ককে ‘ইন্টেজিল্যান্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমের’ মধ্যে থাকবে, যাতে পুরো মহাসড়কে নজরদারি করা যায়।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার রুহুল আমিন বলেন, চট্টগ্রামে বন্দর থাকার কারণে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক হয়ে গেছে। তাই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রায় ৯২ শতাংশ চট্টগ্রামের সঙ্গে হয়। নতুন এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে। দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে গতি আসবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন মহাসড়কের জন্য ভূমি অধিগ্রহণে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ভূমির অপচয় করা ঠিক হবে না। এ ছাড়া রাস্তা পারাপারের জন্য পাতাল সড়ক ও পদ সেতু এমনভাবে করতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি না বাড়ে।
চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের তাগিদ দেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে দেশের ‘লাইফ লাইন’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেক বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় নতুন নতুন সমস্যার উদ্ভব হয়। তাই এসব সমস্যা চিহ্নিত করে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে প্রকল্পের মেয়াদ ও খরচ না বাড়ে।