খোলা বাজার২৪, বুধবার, ৩০ মার্চ ২০১৬ : কুমিল্লার কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর খুনি শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের দাবিতে শুক্রবার থেকে মাসব্যাপী গণস্বাক্ষর কর্মসূচি নিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ।
বুধবার সারাদেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এক ঘণ্টা ধর্মঘটের পর বিকালে শাহবাগে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।
কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় তনু হত্যার নয় দিনেও খুনি শনাক্ত না হওয়ার মধ্যে বুধবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এক ঘণ্টা ধর্মঘট হয় গণজাগরণ মঞ্চের ডাকে।
এই দাবিতে কুমিল্লায় রোড মার্চ করে আসা ইমরান দুপুরে রাজধানীতে ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীদের মিছিলে সংহতি জানান।
গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে তনুর খুনি গ্রেপ্তারের দাবির সঙ্গে হাই কোর্টের নির্দেশনা মেনে যৌন নিপীড়ন বিরোধী নীতিমালা কার্যকর, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন প্রণয়ন এবং সব নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টিও রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ইমরান বলেন, “চার দফা দাবি আদায়ে আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। যত বাধা-বিপত্তি আসুক না কেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
“এই দাবির সপক্ষে আমরা আগামী শুক্রবার থেকে দেশব্যাপী সর্বস্তরের মানুষের গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করব। মাসব্যাপী গণস্বাক্ষর সংগ্রহের পর মহান জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার বরাবর পেশ করব।”
চার দফা দাবির পক্ষে জনমত গঠনে প্রয়োজনে গণজাগরণ মঞ্চ সারাদেশে রোডমার্চ করবে বলেও জানান তিনি।
গণস্বাক্ষর সংগ্রহ শুরুর দিন শুক্রবার বিকালে কেন্দ্রীয়ভাবে শাহবাগে এবং সারাদেশে নাগরিক সমাবেশ করবে গণজাগরণ মঞ্চ।
ইমরান বলেন, “তনুকে ধর্ষণ ও খুনের ১০ দিন অতিবাহিত হয়েছে। এই ১০ দিন রাষ্ট্রের ব্যর্থতার ১০ দিন।
“নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের পর থেকে সারাদেশের মানুষ যখন সোচ্চার হয়ে উঠেছেন, রাজপথে নেমে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, আমাদের প্রশাসন সেখানে আশ্চর্যজনক নির্লিপ্ত ও নিস্পৃহ আচরণ করছে।”
সারাদেশে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে তনু হত্যার তদন্তভার থানা পুলিশের পর ডিবি হয়ে এখন সিআইডির উপর চেপেছে। সেনাবাহিনী এই তদন্তে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।
নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ‘যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ স্কোয়াড’ গঠনের ঘোষণাও দেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র।
“গত নববর্ষের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নারীদের নিপীড়ন করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের নির্বিকার আচরণে আমরা বুঝেছিলাম বিচার দাবিতে আন্দোলনের পাশাপাশি প্রতিরোধের দায়িত্বও আমাদের মতো সাধারণ জনগণকেই নিতে হবে।”
“ছাত্র-জনতার সম্মিলনে আমরা যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ স্কোয়াড গঠন করব। এই স্কোয়াড নববর্ষের উৎসবে নারীদের নিরাপত্তা দিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সাহায্য করবে,” বলেন ইমরান।