Wed. Mar 19th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

51খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল ২০১৬: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে মারলন স্যামুয়েলস-কার্লোস ব্রাফেটের বীরত্বগাথার আড়ালে চলে গেছে স্যামুয়েল বদ্রির লেগস্পিন। ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা যে পাওয়ার প্লেতে খাবি খেল, সেটি বদ্রির বোলিংয়ের সৌজন্যেই। ক্যারিবীয় লেগস্পিনারে গুগলির সামনেই অসহায় আত্মসমর্পণ করলেন ইংলিশ অধিনায়ক এউইন মরগান।
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিয়মিতই বোলিং-জাদু দেখিয়েছেন লেগ স্পিনাররা। বদ্রির সঙ্গে সে তালিকায় আছেন আফগানিস্তানের রশিদ খান, নিউজিল্যান্ডের ইশ সোধি, দক্ষিণ আফ্রিকার ইমরান তাহির, অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম জাম্পা, ইংল্যান্ডের আদিল রশিদ। টুর্নামেন্টের সেরা চার বোলারের দুজনই লেগস্পিনার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে লেগ স্পিনারদের এই আধিপত্য আক্ষেপ বাড়াচ্ছে বাংলাদেশের জুবায়ের হোসেনের, ‘বিশ্বকাপে লেগ স্পিনারদের দারুণ বোলিং দেখে মনে হয়েছে, খেললে হয়তো আমিও ভালো করতে পারতাম।’ ব্যাখ্যা করেছেন এই আত্মবিশ্বাসের কারণটাও, ‘লেগ স্পিনারদের হাতে গুগলি, ফ্লিপার নানা বিকল্প থাকে। টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটসম্যানরা রান তুলতে অনেক তাড়াহুড়া করে। এতে লেগ স্পিনারদের উইকেট পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।’
গত নভেম্বরে জিম্বাবুয়ে সিরিজে প্রথম টি-টোয়েন্টি খেলেছেন জুবায়ের। আসলেই প্রথম, ঘরোয়া ক্রিকেটেও যে কখনো টি-টোয়েন্টি খেলা হয়নি তাঁর! সেই ম্যাচে প্রথম ওভারে ১৭ রান দিলেও পরের ওভারে ৩ রানে পান ২ উইকেট। এরপর থেকে কীভাবে যেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অদৃশ্যই হয়ে গেলেন ২০ বছরের এই তরুণ!
এর আগে ২০১৪ সালের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন জুবায়ের। ৬ টেস্টে ১৬ উইকেট, ইনিংসে ৫ উইকেট একবার। তবে পরিসংখ্যান তাঁর প্রতিভা পুরোপুরি মেলে ধরতে পারবে না। সে জন্য ফিরে যেতে হবে গত জুনে ভারতের বিপক্ষে ফতুল্লা টেস্টে। তাঁর গুগলি রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিল ভারতের সমৃদ্ধ ব্যাটিং লাইনআপকে। সবচেয়ে বেশি খাবি খেয়েছিলেন কে জানেন? বিরাট কোহলি, বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। জুবায়েরের গুগলিতেই আউট হয়েছিলেন ভারতের টেস্ট অধিনায়ক। লেগ স্পিনের ঘূর্ণিতে উইকেট দিতে বাধ্য হয়েছিলেন ঋদ্ধিমান সাহাও। অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের একমাত্র জয়ের নায়কও ছিলেন তিনি। মাত্র ৮ বলে স্থানীয় দল গুটেংয়ের ৪ উইকেট নিয়েছিলেন জুবায়ের।
গত তিন মাসে বাংলাদেশ দল ব্যস্ত সময় কাটালেও জুবায়েরের কেটেছে অলস সময়। তবে সময়টা কাজে লাগিয়েছেন বলেই জানালেন তিনি, ‘কিছুদিন রুয়ানের (কালপাগে) সঙ্গে অ্যাকশন নিয়ে কাজ করছি। অ্যাকুরেসি বাড়ানোর চেষ্টা করছি। ঘাটতিগুলো ঠিক করার চেষ্টা করছি।’
দিনের পর দিন দলের বাইরে থাকলেও হতাশ নন জুবায়ের। সম্প্রতি অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার একটি কথা তাঁকে আরও অনুপ্রাণিত, ‘মাশরাফি ভাই বলেছেন, সামনে আরও সময় আছে। যেখানেই খেলিস, ভালো করার চেষ্টা করবি। আমি তো মনে করি, আমাদের দলে মুস্তাফিজের পর তোরই সবচেয়ে ভালো বোলার হওয়ার সম্ভাবনা। কথাটা শুনে ভীষণ অনুপ্রাণিত হয়েছি।’
সম্ভাবনা জাগিয়েও লেগ স্পিনারদের পথ হারিয়ে ফেলার নজির ক্রিকেটে কম নেই। মাশরাফির কথায় প্রেরণা খুঁজে নেওয়া জুবায়ের নিশ্চয়ই পথ হারাবেন না।