খোলা বাজার২৪,বুধবার, ৬ এপ্রিল ২০১৬: শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় এশিয়ান বা অন্য সংখ্যালঘু জাতির মানুষদের কি ব্রিটিশ পুলিশ বেশি হয়রানি করে? ২০১৩ সালের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, পুলিশ রাস্তায় থামিয়ে যখন তল্লাশী করে, শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় অন্য সংখ্যালঘুদের বেলায় এরকম তল্লাশীতে পড়ার সম্ভাবনা দ্বিগুন। ব্রিটেনে গত বছর যে প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার মানুষকে রাস্তায় থামিয়ে তল্লাশী চালানো হয়, তাদের মধ্যে ১৩ শতাংশই এশিয়ান। তবে ব্রিটিশ পুলিশ এশিয়ানদের সঙ্গে এরকম বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ অস্বীকার করছে।
এশিয়ান তরুণদের সঙ্গে পুলিশের সম্পর্কে যে একটা সমস্যা আছে সেটা অবশ্য তারা স্বীকার করে। তাই সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় তারা এশিয়ানদের সঙ্গে সম্পর্কউন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। লন্ডনে পুলিশ গত কদিন ধরে এশিয়ান তরুণদের সঙ্গে সাক্ষাৎকার করে তাদের সঙ্গে খোলামেলা আলাপ করছে। বিবিসির টিম যখন এরকম একটি অনুষ্ঠানে যায় তখন তারা সেখানে এশিয়ান টিন এজারদের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন আহ্বান করছিল। এই অনুষ্ঠানে ছিল ১৪ বছর বয়সী আব্বাস।
তার কোন বন্ধু ব্রিটিশ পুলিশের ‘স্টপ এন্ড সার্চের’ শিকার হয়েছে কিনা জানতে চাইলে আব্বাস জানায়, তার বেশিরভাগ বন্ধুরই এই অভিজ্ঞতা আছে। তার মতে এরকম তল্লাশীর শিকার হয় যখন কেবল এশিয়ান বা ক্যারিবিয়ানরা, তখন এটাকে তার কাছে বর্ণবাদী বলেই মনে হয়। রাস্তায় কোন কোন মানুষকে থামিয়ে তল্লাশির অধিকার ব্রিটিশ পুলিশের আছে। লন্ডনের হ্যারো এলাকার পুলিশ কমান্ডার সাইমন ওভেন্স অবশ্য দাবি করলেন, এরকম বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ সঠিক নয়। শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় এশিয়ানদের কখনোই বেশি তল্লাশি করা হয় না।
তবে গত মাসেই ব্রিটেনের একটি পুলিশ ওযাচডগ সংস্থা জানিয়েছে, পুলিশ বাহিনী অনেক সময়েই তাদের ক্ষমতা অপব্যবহার করছে স্টপ এন্ড সার্চের ক্ষেত্রে। এশিয়ান পুলিশ কর্মকর্তা আমারিতপাল উপ্পাল বলেন, তারা এসব সমস্যা মেটানোর জন্য এখন কাজ করছেন। তরুণদের সঙ্গে পুলিশের সম্পর্কে যে দূরত্ব আছে, আমরা সেটা ঘোচাতে চাই। ১৪ বছর বয়সী ব্রিটিশ কিশোরি মালিহা চায় পুলিশ তাদের সুরক্ষায় আরও ব্যবস্থা নিক। মালিহা জানায়, সে যেহেতু হিজাব পরে, তাই অনেক সময়েই তাকে বিভিন্ন রকম মন্তব্যের শিকার হতে হয়। অনেকে আমাকে আমার দেশে ফিরে যেতে বলে। একবার আমার আর আমার মায়ের ওপর একজন গাড়ি চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিল। এটা ছিল এক আতংকজনক অভিজ্ঞতা।