খোলা বাজার২৪,বুধবার, ৬ এপ্রিল ২০১৬: আর্সেনিক ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদশের দুই কোটির মত মানুষ। যদিও এই সমস্যার সমাধানে গত কয়েক বছরে দেশ জুড়ে কয়েক লাখ নলকূপের অর্সেনিক মাত্রা পরীক্ষা করা হয়েছে। বসানো হয়েছে আর্সিনিকমুক্ত গভীর নলকূপ। তারপরও আর্সেনিককে দেশের প্রধান স্বাস্থ্যগত সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘের সহযোগী এক সংগঠন।
আজ বুধবার এক সংক্রান্ত এক নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে হিউমেন রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ এখনো আর্সেনিক ঝুঁকিতে রয়েছে। দেশটিতে প্রতিবছর আর্সেনিকজনিত রোগে মারা যাচ্ছে ৪৩ হাজার মানুষ। এছাড়া ক্যান্সার, ত্বকের ক্ষয়, হৃদরোগ ও ফুসফুসের জটিলতায় ভুগছে আরো কোটি কোটি মানুষ।
দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের দেয়া হিসাব মতে ২০০০-২০০৩ সালের মধ্যে গ্রামগুলোতে ৫ লাখের মত নলকুপে আর্সেনিক পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। তখন আর্সেনিক মুক্ত নলকুপগুলোকে সবুজ ও আর্সেনিকযুক্তগুলোকে লাল রং দেয়া হয়েছিল। ২০০৩ সালের আগে বাংলাদেশের ২ কোটির মত মানুষ আর্সেনিক মেশানো পানি পান করত।
কিন্তু সম্প্রতি গ্রবষণায় দেখা যাচ্ছে, এখনো বাংলাদেশের ২ কোটি মানুষ অনিরাপদ বা আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছে। সংস্থার মতে কিছু রাজনৈতিক নেতা তাদের সমর্থকদের জন্য নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করলেও গ্রামগুলোর অসংখ্য মানুষ এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। ওইসব প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে আর্সেনিক পরীক্ষা বা এটি তদারকি করার কার্যক্রমে ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করছে এইচআরডব্লিউ।
এইচআরডব্লিওর গবেষক রিচার্ড পেয়ার্সহাউস মনে করেন, গ্রামাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষকে আর্সেনিক মেশানো পানি পান থেকে বিরত রাখতে বাংলাদেশ সরকার কোনো মৌলিক ও কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি। যদিও সরকার এমন ভাব করছে যেন তারা এই সঙ্কটের সিংহভাগই সমাধান করে ফেলেছেন। কিন্তু এই সমস্যার সমাধানে সরকার যদি তৎপর না হয় এবং আন্তর্জাতিক দাতারা যদি এতে সহায়তা করতে ব্যর্থ হয় তবে দেশটির লাখ লাখ মানুষ আর্সেনিক সংক্রান্ত রোগে মারা যাবে।
দেশটিতে সরকার, আন্তর্জাতিক দাতারাও এনডিওগুলো কতগুলো নিরাপদ নলকূপ বসিয়েছে তার কোনো সঠিক সংখ্যা নেই বলেও অভিযোগ করেছে ওই গবেষক। তারা সবাই নিজেদের মত করে এর কল্পিত সংখ্যা উল্লেখ করছেন। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, চীন, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া ব্যাপক আর্সেনিক সঙ্কট মোকাবেলা করছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, হাজার হাজার বছর আগে হিমালয়ের আর্সেনিক সমৃদ্ধ শিলাগুলো গলে প্রাকৃতিক রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় নিম্নাঞ্চল সঞ্চিত হয়েছিল।