Sat. Mar 15th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

42খোলা বাজার২৪, শনিবার, ৯ এপ্রিল ২০১৬ : ৮৫ জন আশ্রয়প্রার্থীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নিউ ইয়র্কে বিক্ষোভ করেছে অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠন।
শুক্রবার বিকালে নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে ‘দেশিজ রাইজিং আপ এ্যান্ড মুভিং’- ড্রাম এর উদ্যোগে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
গত ৪ এপ্রিল বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের এ আশ্রয়প্রার্থীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এর প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে বক্তারা আশ্রয়প্রার্থী নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়ার তীব্র সমালোচনা করে এ ধরনের ‘অমানবিক’ পদক্ষেপ বন্ধ করার আহ্বান জানান।
তারা বলেন, আশ্রয়ের আবেদন জানানো ব্যক্তিদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিলে তারা ‘ভয়াবহ নির্যাতন ও বর্বরতা’র শিকার হতে পারেন।
“নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রে আসা লোকজনকে গ্রেপ্তার করে নিজ দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার পর অনেকেই নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছেন,” বলেন ড্রামের সংগঠক কাজী ফৌজিয়া।
নিউ ইয়র্ক : আশ্রয়প্রার্থীদের বহিস্কারাদেশ স্থগিতের দাবিতে ড্রামের সমাবেশ। বক্তব্য রাখছেন কাজী ফৌজিয়া। ছবি-বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। নিউ ইয়র্ক : আশ্রয়প্রার্থীদের বহিস্কারাদেশ স্থগিতের দাবিতে ড্রামের সমাবেশ। বক্তব্য রাখছেন কাজী ফৌজিয়া। ছবি-বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা না ঘটলেও মধ্য আমেরিকার দেশগুলোতে ফেরত যাওয়া আশ্রয়প্রার্থীরা ‘বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছেন’ বলেও জানান এ সংগঠক।
“সেন্ট্রাল আমেরিকার দেশগুলোতে এমন বর্বরতা চলছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে যাদেরকে বহিষ্কার করা হয়, সকলকেই ক্ষমতাসীন দলের মাস্তানেরা মেরে ফেলেছে।”
ফেরত যাওয়া আশ্রয়প্রার্থীদের ‘মেরে ফেলার প্রতিবাদে’ সমাবেশস্থলে তিনটি প্রতীকী লাশও রাখা হয়।
দেশে ফিরে গেলে হামলা ও নির্যাতনের আশঙ্কা করছেন বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থী সাইফুল ইসলামও।
“ফিরে গেলে হয় মরতে হবে, নয়তোবা গুম হতে হবে, অথবা ক্রস ফায়ারে পড়তে হবে,” বলেন এ যুবক।
দালালকে বিপুল পরিমাণ টাকা দিয়ে ১৭ দেশ ঘুরে আমেরিকায় আসার পর বছরখানেক ডিটেনশন সেন্টারের ‘অমানবিক’ পরিবেশে থেকেও ‘আশ্রয়’ না পাওয়ার আক্ষেপের কথা জানান তিনি।
“শুনেছিলাম আমেরিকা মানবাধিকারের দেশ। অথচ ক্যালিফোর্নিয়ার অরেঞ্জ কাউন্টি ডিটেনশন সেন্টারে একবছর ধরে আমাকে আটকে রাখা হয়েছে। দিনের ১৯ ঘণ্টা ছোট্ট একটি সেলে তালাবদ্ধ অবস্থায় কাটিয়েছি, তবুও আমার এসাইলাম নেওয়া হয়নি।”
“বেঁচে থাকার আর কোন অবলম্বন নেই ভেবে অনশন শুরু করি। এরপরই জামিন পাই। যারা মুক্তি পাননি তাদেরকে এখন বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে,” বলেন সাইফুল।
সমাবেশে ডিটেনশন সেন্টার থেকে জামিন পাওয়া আরেক বাংলাদেশি কামরান আহমেদ বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের এমন নিষ্ঠুর আচরণের বিরুদ্ধে সমগ্র মানবতার ঐক্য গড়ে উঠা উচিত।”
নিউ ইয়র্ক : যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়প্রার্থী বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের বহিস্কার করার আদেশ স্থগিতের দাবিতে মিছিল। ছবি-বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। নিউ ইয়র্ক : যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়প্রার্থী বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের বহিস্কার করার আদেশ স্থগিতের দাবিতে মিছিল। ছবি-বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। সমাবেশে আশ্রয়প্রার্থীদের সমর্থনে বাংলা, আরবি, উর্দু, হিন্দি ও নেপালি ভাষায় লেখা পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড প্রদর্শিত হয়।
নিউ ইয়র্কে ইউনাইটেড ট্যাক্সি ড্রাইভার্স এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট ওসমান চৌধুরী, বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক রহিম হাওলাদারসহ কয়েকশ’ প্রবাসী এতে অংশ নেন।
এদিকে, বহিস্কারের অপেক্ষায় থাকা ১৬৭ বাংলাদেশির পক্ষে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রী জেহ জনসনকে চিঠি দিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের চেয়ারম্যান কংগ্রেসম্যান জোসেফ ক্রাউলি, কংগ্রেসনাল এশিয়ান প্যাসিফিক আমেরিকান ককাসের চেয়ার এমিরিটাস ও ইমিগ্রেশন টাস্ক ফোর্সের চেয়ার মাইক হুন্ডা ও কংগ্রেসনাল এশিয়ান প্যাসিফিক আমেরিকান ককাসের চেয়ার জুডি চু।
এসব চিঠিতে তিন কংগ্রেসম্যান ‘আশ্রয় আবেদন পর‌্যালোচনার স্বার্থে’ বাংলাদেশিদের বহিস্কার কার‌্যক্রম অন্তত: দু’মাস স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন।