খোলা বাজার২৪,সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০১৬: জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি যখন ভাঙনের পর প্রতীক নিয়ে লড়ছে সেখানে এক প্রতীকে এসে ঐক্যবদ্ধ হতে চাইছে মুসলিম লীগ।
তবে ‘পাঞ্জা’ ছেড়ে ‘হারিকেনে’ই থাকতে চাইছে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের দুই অংশ। আগামী জুনের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে একীভূত মুসলিম লীগের ঘোষণা আসতে পারে বলে দলটির দুই অংশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
২০০৮ সালে ১৩ নভেম্বর ২১ নম্বর দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হয় বাংলাদেশ মুসলিম লীগ।
অ্যাডভোকেট নুরুল হক মজুমদার সভাপতি ও কাজী আবুল খায়ের মহাসচিবের নেতৃত্বাধীন দলটির প্রতীক রয়েছে হারিকেন।
অন্যদিকে ৪০ নম্বর দল হিসেবে ২০১৩ সালের ২ জুন নিবন্ধন পায় বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল। এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান সভাপতি ও অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরীর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব রয়েছেন এ অংশে। তাদের প্রতীক হাত (পাঞ্জা)।
নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ নামে নিবন্ধন পেতে দুই পক্ষই আবেদন করেছিল।
হারিকেন প্রতীকে একটি দল নিবন্ধন পাওয়ায় একই নামের আরেকটি দল আদালতের শরণাপন্ন হয়। আদালতের আদেশে চার বছর পর পাঞ্জা প্রতীকে মুসলিম লীগ-বিএমএল নামে নিবন্ধিত হয় কামরুজ্জামান খানের পক্ষটি।
গতবছরের সেপ্টেম্বরে মুসলিম লীগের সভাপতি নুরুল হক মারা গেলে মহাসচিব খায়েরের তত্বাবধানে চলছে দলটি।
কাজী আবুল খায়ের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, নবম সংসদে দলটি অংশ নিলেও দশম সংসদে তারা অংশ নেননি।
“আমরা নিবন্ধনের শুরুতে আটভাগে বিভক্ত ছিলাম। এখন দুই ভাগে রয়েছি। হারিকেন প্রতীকে আমরা, আরেক অংশ পাঞ্জা প্রতীকে রয়েছে। ঐক্যবদ্ধ থাকতেই আমাদের প্রক্রিয়া চলছে। আশা করছি, জুন নাগাদ এক হতে পারব।”
অন্যদিকে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল এর সভাপতি কামরুজ্জামান খান বলেন, “নিবন্ধন নিয়ে আমরা এখনও কোনো নির্বাচনে যাইনি। আর আলাদা থাকতে চাই না। শিগগির কাউন্সিলের মাধ্যমে একীভূত হয়ে ইসিকে জানাব।”
মুসলিম লীগের দুই পক্ষ হারিকেন প্রতীকেই ঐক্যবদ্ধ হবে বলে জানান তিনি।
“আমরা এক হয়ে পাঞ্জা প্রতীক ছেড়ে হারিকেন প্রতীকে এক হব। যেহেতু দ্বন্দ্ব ছিল, তাই আদালতে গিয়েছিলাম-এখন এক হয়ে আমাদের অংশ বিলুপ্ত ঘোষণা করে এক হয়ে যাব।”
বর্তমানে ইসিতে ৪০টি নিবন্ধিত দল রয়েছে। এরমধ্যে কয়েকটি দলের বিভক্তি ঘটলেও এই প্রথম এক হওয়ার ঘোষণা এল কোনো দলের পক্ষ থেকে।
জানতে চাইলে ইসির আইন শাখার উপ সচিব মহসিনুল হক বলেন, “সব শর্তপূরণ করে নিবন্ধন পেয়েছে দলগুলো। তারা দুটি দল ঐক্যবদ্ধ হতে গিয়ে উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে কমিশনে আবেদন করলে তা পর্যালোচনা করা যেতে পারে।”
জাসদ নিয়ে বিলম্ব ইসির
গত ৬ এপ্রিল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের দুই পক্ষের শুনানির পরও আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি ইসি। এরই মধ্যে হাসানুল হক ইনু নেতৃত্বাধীন জাসদ সিইসির কাছে নতুন করে চিঠি দিয়েছে রোববার; সোমবার তাদের ৪২ জন প্রার্থীর তালিকাও জমা দিয়েছে।
ইসির দেওয়ার তথ্য অনুযায়ী, জাসদ চতুর্থ ধাপে ৪৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে।
জানতে চাইলে জাসদের অপর অংশের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান জানান, তারাও চট্টগ্রাম-ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১০ জনের মনোনয়ন প্রত্যয়ন করেছেন।
“এখন পর্যন্ত ইসি সিদ্ধান্ত না দিলেও প্রতীক দেওয়ার বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দেখা যাক ইসি কী সিদ্ধান্ত দেয়।”
একাধিক রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, ১৯ এপ্রিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় রয়েছে। এর আগেই তারাও কমিশনের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকবেন।