খোলা বাজার২৪, রবিবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৬: বংংদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সুদ হার আগামী ছয় মাসে কমার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না প্রাইম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আহমেদ কামাল খান চৌধুরী।
ব্যাংকটির ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার রাজধানীতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতিতে জুন মাস পর্যন্ত সরকারের ঋণ গ্রহণের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ফেব্র“য়ারি মাসেই তা অতিক্রম করেছে। এরপর থেকে যে ঋণ নিচ্ছে তা অতিরিক্ত।
“যার ফলে সরকারি-বেসরকারি দুই দিক থেকেই ঋণের চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। এ চাহিদার ফলে আপাতত আগামী ছয় মাস সুদ হার আর কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।”
তবে সরকার অতিরিক্ত ঋণ নিলেও তাতে ব্যাংকগুলোর তারল্য ব্যবস্থাপনায় সমস্যা সৃষ্টি হবে না বলে মনে করছেন প্রাইম ব্যাংকের এমডি।
তিনি বলেন, “কারণ এখনও প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকগুলোর কাছে অলস পড়ে আছে।”
বর্তমানে দেশের সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর গড় সুদ হার ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে এটা ১১ দশমিক ৩১ এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
পূর্বাণী হোটেলে এ সংবাদ সম্মেলনে আরেক প্রশ্নের উত্তরে আহমেদ কামাল খান বলেন, “এটিএম কার্ড জালিয়াতির ঘটনায় প্রাইম ব্যাংক আক্রান্ত না হলেও ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের সমস্যা না হয় সেজন্য আমরা আগাম প্রস্তুতি নিয়েছি। এ ধরনের আননোন ইভেন্ট মোকবেলার জন্য একটি আবহ তৈরি করে আমরা আগে থেকেই কাজ করছি।”
তিনি বলেন, “আর্থিক ঝুঁকির চেয়ে এখন অপারেশন ও ডকুমেন্টেশন ঝুঁকি বড়। কোথা থেকে কোন দিক থেকে আঘাত আসে তা কেউ জানে না।”
‘আইটি ও ডিজিটাল প্লাটফর্মকে বেইজ’ ধরে প্রাইম ব্যাংক ভবিষ্যত ব্যাংকিংয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানান ব্যাংকটি এমডি।
বেসরকারি ব্যাংকটির মূলধন পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি জানান, প্রাইম ব্যাংকের বর্তমান পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ২৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। ১৯৯৫ সালে ব্যাংকটি মাত্র ১০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন নিয়ে যাত্রা শুরু করে। এ হিসাবে ২১ বছরে ব্যাংকটির মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ১৯ কোটি টাকার বেশি।
আহমেদ কামাল বলেন, ২০১৫ সাল শেষে ব্যাংকের আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা, আর বিনিেেয়াগ করা হয়েছে ১৫ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রাইম ব্যাংকের বর্তমান খেলাপি ঋণ ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ, যা আগের বছরের চেয়ে একটু বেশি।
“গত দুই বছর রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এটি বেড়েছে। তাছাড়া খেলাপি ঋণ সংজ্ঞায়নে কিছু নীতিগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর কারণে কিছুটা বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “খেলাপি ঋণ রাইট অফ করা হলেও আদায়ের চেষ্টা কিন্তু বন্ধ হয় না। যেমন, আমরা রাইট অফকৃত ঋণ থেকেও গত বছর ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা আদায় করেছি।