খোলা বাজার২৪, সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০১৬: কোহিনূর হীরা নিয়ে প্রায় দেড় শতাব্দী ধরে বিতর্ক চলছে। অভিযোগ আছে, কোহিনূর হীরা ভারত থেকে চুরি করে নিয়ে যায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ফলে দাবি ওঠে, ভারতকে তা ফেরত দিতে হবে।
সোমবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টে কোহিনূর হীরা ফেরত আনাসম্পর্কিত এক মামলার শুনানি হয়। এতে অংশ নিয়ে কেন্দ্র সরকারের পক্ষে আইনজীবী রণজিত কুমার আদালতকে জানান, কোহিনূর হীরা চুরি হয়নি বা ছিনিয়ে নেওয়া হয়নি। মহারাজা রণজিত সিং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে কোহিনূর হীরা উপহার দেন। ফলে এর দাবি করতে পারে না ভারত।
কোহিনূর হীরা এখন ব্রিটিশ রাজপরিবারের অমূল্য সম্পদের অন্তর্ভুক্ত। ব্রিটিশ মহারানি ভিক্টোরিয়ার মুকুটে শোভা পেত এ হীরা। বংশ পরম্পরায় সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন যারা, তাদের মাথায়ও এ মুকুট উঠেছে। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথও পরেন কোহিনূর হীরার মুকুট। তার উত্তরসূরিদের জন্যও তা সংরক্ষিত রয়েছে।
১০৫ ক্যারেটের বিরল হীরা কোহিনূর। এর বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ২০ কোটি ডলার। শুধু দামের বিচারেই এটি মূল্যবান নয়, ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধির বাহকও এই হীরা।
কোহিনূর হীরা চুরি হয়নি বা জোর করে নেওয়া হয়নি বলে সরকারি আইনজীবী কুমার দাবি করলেও বলা হয়ে থাকে, ১৮৫০ সালে ব্রিটিশ সরকারের নিযুক্ত পাঞ্জাবের গভর্নর জেনারেল ডালহৌসি পাঞ্জাবের মহারাজা রণজিত সিংকে বাধ্য করেন কোহিনূর হীরা রানি ভিক্টোরিয়াকে উপহার দেওয়ার জন্য।
আইনজীবী কুমার বলেন, এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো তাদের অবস্থান তুলে ধরেনি। তারাও এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেবে।
শুনানির পর সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে আদেশ দেন, আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে কোহিনূর হীরা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নথি আকারে আদালতে পেশ করতে।
অল ইন্ডিয়া হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড শ্যোসাল জাস্টিস ফ্রন্টের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ৯ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্র সরকারকে কোহিনূর হীরা ফেরত আনা বিষয়ে অবস্থান পরিষ্কার করতে আদেশ দেন। সে অনুযায়ী সোমবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হয়।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর কেন্দ্র সরকারের উদ্দেশে বলেন, সরকার যদি এ মামলা খারিজ চায়, তবে ভবিষ্যতে কোহিনূর হীরা ফেরত আনার দাবি তুলতে সরকারকে সমস্যায় পড়তে হবে।
ভারতের জনগণের দাবি, ১০৫ ক্যারেটের মহামূল্যবান কোহিনূর হীরা ফেরত আনা হোক। বিভিন্ন মহল থেকে এ বিষয়ে সরকারের ওপর চাপ রয়েছে।
২০১৩ সালে ব্রিটিশ সরকারের কাছে কোহিনূর হীরা ফেরত চাওয়া হয়। কিন্তু তারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। তারপরও কোহিনূর হীরার দাবি ছাড়েনি ভারতের মানুষ।