খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০১৬: একুয়েডরের উপকূলীয় অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা চারশ ছাড়িয়ে ৪১৩ জনে দাঁড়িয়েছে, জানিয়েছে দেশটির সরকার; আড়াই হাজার মানুষকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে।
শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ধসে পড়েছে বহু ভবন, সেতু; সড়ক ব্যবস্থা দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ভূমিকম্পের পর থেকে জীবিতদের খোঁজে ধ্বংস্তূপে তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে।
বিবিসি জানিয়েছে, সোমবার দেশটির প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেয়া সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চলগুলো পরিদর্শনের পর ওই এলাকাগুলোর পুনর্র্নিমাণের খরচ কয়েশ শত কোটি ডলারে পৌঁছে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন।
এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ গত সাত দশকের মধ্যে একুয়েডরের সবচেয়ে শোচনীয় ঘটনা বলে জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার রাতে উপকূলীয় শহর মান্তার কাছে একটি হোটেলের ধ্বংসস্তূপ থেকে দুই শিশু বালিকাসহ ছয়জনকে জীবিতকে উদ্ধার করা হয়েছে। ওই শিশুদুটির একজনের বয়স তিন বছর ও অপর জনের নয় বছর।
ভূমিকম্পের উপকেন্দ্রের কাছে পর্যটন শহর পেদারনালেস ও পোর্তোভিয়েজো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশান্ত মহাসগারের তীরে পামগাছ ঘেরা ছিমছাম শহর পেদারনালেস ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এখানে অন্তত চারশ জন মারা গেছেন।
জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট কোরেয়া বলেন, “মৃতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা করছি আমি, কারণ ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ অব্যাহত রেখেছি আমরা। ধ্বংসস্তূপে জীবিতরা আটকা পরে আছেন, এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তাদের উদ্ধারকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।”
দ্য অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটস্ এর মহাসচিব লুয়িস আলমাগরো জানিয়েছেন, পুনর্র্নিমাণ কাজের জন্য সংস্থাটির জরুরি তহবিল থেকে একুয়েডরকে সহায়তা দেওয়া হবে।
সোমবার একুয়েডরের অর্থমন্ত্রী এক ঘোষণায় চীনা উন্নয়ন ব্যাংক থেকে দুই বিলিয়ন ডলার পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। তবে এই অর্থ পুনর্র্নিমাণ খাতে দেওয়া হচ্ছে কিনা তা পরিষ্কার হওয়া যায়নি।
সোমবার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের ভূমিকম্প দুর্গত এলাকায় বেশ কয়েকটি পরাঘাত অনুভূত হয়েছে, এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালীটি পাঁচ দশমিক এক মাত্রার ছিল।
উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য ১৩ হাজার ৫০০ জরুরি কর্মী নামানো হয়েছে, এদের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন একুয়েডরের প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে এসেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্যানুযায়ী ভূমিকম্পটির উৎপত্তি ভূত্বকের মাত্র ১৯ দশমিক দুই কিলোমিটার গভীরে। গভীরতা কম হওয়ায় এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ভূমিকম্পটি একুয়েডরের প্রতিবেশী দেশ কলম্বিয়ায়ও অনুভূত হয়েছে।