Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

Untitled-1934খোলা বাজার২৪,বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল ২০১৬: ফ্রান্সেসকো টট্টি নাকি তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রীর চেয়েও বেশি ভালোবাসেন রোমাকে। তা বাসাই তো স্বাভাবিক। মাত্র ১৩ বছর বয়সে এই ক্লাবের আঙিনায় পা রেখেছিলেন। এখন তাঁর বয়স ৩৯। আর কোনো ক্লাবে কখনো যাননি। ১৯৯২ সালে যুবদল পেরিয়ে সিনিয়র দলে অভিষেকের পর দুই যুগ এক ক্লাবে কাটিয়ে দিয়ে টট্টি অবশেষে অবসরে চললেন। রোমার জার্সিতে খেলবেন আর মাত্র ক​টা ম্যাচ। তবে এর মধ্যেই কাল দেখিয়ে দিলেন, কে তিনি জাদুকর। নিশ্চিত হারতে বসা ম্যাচটিতে টট্টির মাত্র দুই ছোঁয়ায় যে অবিশ্বাস্যভাবে জিতে গেল রোমা! ইতালিয়ান লিগে তুরিনোকে হারাল ৩-২ গোলে।

৮৫ মিনিট পর্যন্ত স্কোর ২-১। ৮৬ মিনিটে মাঠে নামলেন বদলি হিসেবে। ৮৬ মিনিটে প্রথম স্পর্শ বলে। তাতেই গোল! ৮৯ মিনিটে বলে দ্বিতীয় স্পর্শ, গোল আরও একটি! তিন মিনিটে, দুই স্পর্শে হারতে বসা দলকে টট্টি এনে দিলেন অবিশ্বাস্য এক জয়। এতটাই অবিশ্বাস্য, ম্যাচ শেষে সমর্থকেরা তখনো ফোন করে প্রিয়জনকে খবরটা দিতে গিয়ে তখনো হু হু কাঁদছে। আর সতীর্থরা বিহ্বল চোখে তাকিয়ে আছে, সত্যিকারের দুনিয়াতেই কি এসব ঘটল, না​কি তারাও অভিনয় করছে কোনো চলচ্চিত্রে?
চলচ্চিত্রই তো! সত্যিকারের পৃথিবীতে কি এসব ঘটে? ঘটে, যদি টট্টির মতো জাদুকর কেউ থাকেন। সত্যিকারের পৃথিবীটাকেই যাঁরা বানিয়ে দিতে জানেন রূপকথার জগৎ​।
সেই রূপকথার জন্ম দিতে কাল মাত্র ২৩ সেকেন্ড সময় নিলেন। সেইডু কেইটার বদলি হিসেবে নামার পর আধা মিনিটও হয়নি। মিরালেম পিয়ানিচের ফ্রি কিক থেকে দুর্দান্ত হেডে গোল! ২-২ সমতায় রোমা। তিন মিনিটের মধ্যেই রোমা পেনাল্টি পেল। বিতর্কিত সিদ্ধান্তে অবশ্য। তবে যেন ঠিক করে রাখাই ছিল, রোমা পেয়ে যাবে পেনাল্টি। আর তা থেকে গোল করবেন একজন, এর আগে পুরো মৌসুমে যাঁর নামের পাশে গোল ছিল মাত্র একটি। আর সেই গোলের জাদু কী তা জানেন? গত রোববার বদলি হিসেবে নেমে ৮৬ মিনিটে আটালান্টার বিপক্ষে তিনিই ফিরিয়েছেন ৩-৩ সমতা।
রোমার জার্সিতে এর আগে ৩০০ গোল করেছেন। কিন্তু এই তিন গোল যেন একদিক দিয়ে ছাপিয়ে গেল বাকি সবকিছু।
৩৯ বছর বয়সেও অবশ্য টট্টি থামতে চাইছিলেন না। তবে রোমার সঙ্গে সম্পর্কটার ইতি টানতে বাধ্য হলেন কোচ লুসিয়ানো স্পালেত্তির সঙ্গে বিবাদের কারণে। টানা দুই ম্যাচে কোচকে কি এই বার্তা দিতে চাইলেন, স্পালেত্তির পোড় খাওয়া অভিজ্ঞ চোখ ‘৩৯’ সংখ্যাটার দিকে তাকিয়ে ভুলই করেছে! কোচ স্বীকার করলেন, টট্টি চমকে দিয়েছেন। তবে আসল চমক কাল ছিল অন্যখানে। স্পালেত্তি বলেছেন, ‘আমি তো ভেবেছিলাম টট্টি ফ্রি কিকটাই নেবে, কারণ ও ওটা সবচেয়ে ভালো পারে। এর বদলে দেখলাম ও বক্সে ডিফেন্ডারদের ভেতরে ছোটাছুটি করছে, এরপর বলটাকে ছুড়ে দিল জালে।’
আর সতীর্থ আলেসান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জি বললেন, ‘কীভাবে এটাকে ব্যাখ্যা করব জানি না। মনে হচ্ছে, এটা যেন মহাকাব্যিক কোনো চলচ্চিত্রের শেষ দৃশ্য।’ আর টট্টি? তিনি শুধু একটা কথাই বললেন, ‘এটা দারুণ কিছু ছিল।’