খোলা বাজার২৪, সোমবার, ২৫ এপ্রিল ২০১৬: প্রধানমন্ত্রীর সামনেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন দেশের প্রধান বিচারপতি! নিজেদের অসহায়ত্বের কথা বলতে গিয়ে চোখে টলমল পানি। প্রধানমন্ত্রীকে জানালেন বিচারক জীবনের দীর্ঘ উপলব্ধির কথা।
প্রধান বিচারপতির কান্নার এই দৃশ্য হৃদয় ছুঁয়ে গেছে প্রধানমন্ত্রীর। বসে থাকতে পারলেন না তিনিও। বক্তব্য দেওয়ার কথা না থাকলেও প্রধান বিচারপতিকে আশ্বস্ত করতে চেয়ার ছেড়ে উঠতে হলো প্রধানমন্ত্রীকে। রোববার এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে। দেশের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিদের যৌথ সম্মেলনে।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর মামলার সংখ্যার তুলনায় ভারতের আদালতগুলোতে বিচারপতিদের অপ্রতুলতার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিচারপতি ঠাকুরের ভাষণের ছত্রে ছত্রে ফুটে উঠেছে তার অসহায়ত্বের কথা। আবেগঘন ভাষণে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মামলার পাহাড় জমে যাচ্ছে দেশের আদালতে। আর প্রত্যেকদিন তা নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। আমরা পেরে উঠছি না। সত্যি-সত্যিই আর পেরে উঠছি না। আমাদের অসম্ভব চাপের মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে। শত শত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি ঘটাতে গিয়ে আমাদের কালঘাম ছুটে যাচ্ছে। ভুলের সম্ভাবনা বাড়ছে। একশ জনের কাজ একজনকে করতে হচ্ছে। এক লাফে সংখ্যাটা (বিচারপতির) কম করে দশ গুণ বাড়ানো উচিত। কোনও সরকারই এ ব্যাপারে কিছু করছে না।’
বিচারপতি ঠাকুর প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘সারা দেশে সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচিকে সফল করার জন্য সব রকমের চেষ্টা চলছে। কিন্তু ওই কর্মসূচিকে সফল করে তোলার পথে একের পর এক মামলার পাহাড় ডিঙাতে হবে। এ জন্য দ্রুত বাড়ানো উচিত বিচারপতিদের সংখ্যা।’
বিচারপতি ঠাকুরের ওই ভাষণ শেষ হওয়ার পর থমথমে হয়ে পড়ে বিজ্ঞান ভবনের পরিবেশ। একেবারে সামনের সারিতেই বসে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু এই সম্মেলনে তার তেমন বিশেষ কিছু বলার নেই। এসেছেন উদ্বোধন করতে। কিন্তু তোপটা যখন সরাসরি সরকারের দিকেই, তখন তাকে কিছু বলতেই হয়।
তাই বলতে উঠলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। খুব তড়িঘড়ি এ ব্যাপারে যা করণীয়, তাই করবেন বলে আশ্বস্ত করলেন দেশের প্রধান বিচারপতিকে। আনন্দবাজার।