খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১১ মে ২০১৬: হবিগঞ্জের দুই সহোদর ও তাদের এক চাচাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করা হবে যে কোনো দিন।
প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হক নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বুধবার মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখে।
তিন আসামি বানিয়াচং উপজেলার মহিবুর রহমান ওরফে বড় মিয়া, তার ছোট ভাই মুজিবুর রহমান আঙ্গুর মিয়া এবং তাদের চাচাতো ভাই আব্দুর রাজ্জাককে এদিন রায়ের জন্য আদালতে হাজির করা হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় চারটি ঘটনায় হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের মতো অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন।
আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া, পারভেজ হোসেন ও এম. মাসুদ রানা।
পরে প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ১২ জন এবং আসামিপক্ষে সাত জনের সাক্ষ্য শুনেছে আদালত। এখন যে কোনো দিন রায় ঘোষণা হবে।”
গতবছর ২৯ সেপ্টেম্বর যুদ্ধাপরাধের চার ঘটনায় অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে এই তিন ভাইয়ের বিচার শুরু করে আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ২১ অক্টোবর।
আসামিদের মধ্যে মহিবুর রহমান ওরফে বড় মিয়া (৬৫) হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলাধীন খাগাউড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তার ভাই মুজিবুর রহমান আঙ্গুর মিয়া (৬০) বর্তমান চেয়ারম্যান।
দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১১ ফেব্র“য়ারি তদন্ত শুরু করে প্রসিকিউশনের তদন্ত দল। তদন্তের সময় ২১ জনের বক্তব্য শোনেন তদন্ত কর্মকর্তা।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় খাগাউড়া গ্রামে নেজামে ইসলামের এমএনএ সৈয়দ কামরুল আহসানের বাড়িতে রাজাকার ক্যাম্প ও টর্চার সেল ছিল। আর তাদের বড় ভাই কলমধর ছিলেন খাগাউড়া ইউনিয়ন শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান এবং ছোট ভাই মোস্তফা ছিলেন রাজাকার কমান্ডার।
প্রসিকিউশনের আবেদনে ২০১৫ সালের ১০ ফেব্র“য়ারি ট্রাইব্যুনাল দুই সহোদরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। ওইদিনই বানিয়াচং থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে স্থানীয় পুলিশ। ১২ ফেব্র“য়ারি তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
অন্যদিকে গত বছরের ১৭ মে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির দুইদিন পর মহিবুর-মুজিবুরের চাচাতো ভাই রাজ্জাককে মৌলভীবাজারের আথানগিরি পাহাড় থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওইদিনই ট্রাইব্যুনালে তিনজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় প্রসিকিউশন। ট্রাইব্যুনাল ৩১ মে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়।