Sat. Jun 21st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

41kখোলা বাজার২৪, সোমবার, ১৬ মে ২০১৬: দেশীয় উদ্যোগে মোবাইল ফোন উৎপাদনে শিল্পপার্ক প্রতিষ্ঠায় সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের নীতি সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা চাইলে এই শিল্পপার্ক স্থাপনে জমি বরাদ্দসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘দেশীয় উদ্যোগে মোবাইল ফোন শিল্প গড়ে তোলার এখনই উপযুক্ত সময়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান।
মোবাইল ফোন আমদানিকারক ও উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সভায় দেশীয় উদ্যোগে মোবাইল ফোন উৎপাদনে হাইটেক পার্কের মতো মোবাইল ফোন শিল্পপার্ক স্থাপনে বিএমবিএর নেতারা দাবি জানায়।
বিএমবিএর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে ১০ হাজার কোটি টাকার মোবাইল ফোনের বাজার রয়েছে। এর পুরোটাই বিদেশিদের দখলে। এত বড় একটি বাজার বিদেশিদের হাতে থাকবে, এটি হতে পারে না। প্রয়োজনে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল অথবা শিল্প মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব জায়গা থেকেও মোবাইল ফোন শিল্পপার্কের জন্য জমি বরাদ্দ দেওয়া যেতে পারে।’
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের রোডম্যাপ বাস্তবায়নের সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার মোবাইল ফোন। এটি ফ্যাশন নয়, প্রয়োজনীয় পণ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল, গ্যাস বিলসহ দেশ-বিদেশ থেকে টাকা লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে ফোন ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমানে দেশে প্রায় ছয় কোটি মানুষ ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। মোবাইল ফোন ব্যবহারে বাংলাদেশ বিশ্বের দশম দেশ হিসেবে উঠে এসেছে।’
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই দেশীয় শিল্পের বিকাশ হোক। এ ব্যাপারে সরকার আন্তরিক। কিন্তু আপনাদের এর সক্ষমতা দেখাতে হবে। এত বড় একটি বাজার বিদেশিদের হাতে থাকতে পারে না। গুণগত মান বজায় রেখে পণ্য উৎপাদন করতে পারলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি সম্ভব হবে।’
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘দেশে মোবাইল ফোন প্রচলনের শুরুতে একটি ফোনের দাম ছিল এক লাখ ২০ হাজার টাকা। সরকারের নানা পদক্ষেপ ও সহায়তার কারণে তা আজ সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নাগালে রয়েছে। দেশে এ পণ্য উৎপাদন করতে পারলে এর দাম আরো কমবে। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা চাইলে তাঁদের জমি বরাদ্দসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।’
মন্ত্রীর উদ্দেশে বিএমবিএ সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন জিটু বলেন, ‘দেশে বর্তমানে ১৩ কোটির বেশি মোবাইল ফোন সেট ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে দেশে বছরে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি মোবাইল ফোন ও অ্যাকসেসরিজের বাজার সৃষ্টি হয়েছে। দেশে ফোন তৈরি হলে বিশাল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
নিজাম উদ্দিন জিটু বলেন, ‘সম্পূর্ণ তৈরি বা (সিবিইউ) মোবাইল ফোন আমদানিতে ভ্যাট, কাস্টমসসহ সব মিলিয়ে গড়ে শুল্ক দিতে হয় প্রায় ২৪ শতাংশ। অন্যদিকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশে মোবাইল ফোন তৈরি করলে কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশ আমদানিতে মোট শুল্ক দাঁড়ায় ৩৭ থেকে ৪০ শতাংশ। অর্থাৎ দেশে উৎপাদনের চেয়ে মোবাইল ফোন আমদানি করা লাভজনক। এ কারণে উচ্চশুল্কের ঝুঁকি নিয়ে উদ্যোক্তারা মোবাইল ফোন উৎপাদন শিল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছে না। এ অবস্থায় দেশে মোবাইল ফোন শিল্প গড়ে তুলতে সরকারের পক্ষ থেকে ভৌত অবকাঠামোসহ নীতি সহায়তার বিকল্প নেই।’
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, বর্তমান সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, এফবিসিসিআইয়ের সদস্য হারুনুর রশিদ, বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান মার্গুব মোরশেদ প্রমুখ।