খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১৮ মে ২০১৬: নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে মারধর ও কান ধরে ওঠবস করানোর ঘটনা তদন্তে কাজ শুরু করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) তদন্ত কমিটি।
মঙ্গলবার রাতে বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন তদন্ত কমিটির প্রধান মাউশির ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক মো. ইফসুফ আলী। সঙ্গে ছিলেন কমিটির সদস্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুস ছামাদ।
কমিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পরিচালনা কমিটির সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে। রাত নয়টা থেকে পৌনে ১২টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্টদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
পরে তদন্ত কমিটির প্রধান ইফসুফ আলী বলেন, তদন্তকাজ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজনের সঙ্গে কমিটি কথা বলেছে। তাদের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলা হবে। প্রয়োজনে আরো অনেকের বক্তব্য নেওয়া হবে।
কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইফসুফ আলী বলেন, এই সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া সম্ভব হবে না। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হবে।
লাঞ্ছনার পর শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। মঙ্গলবার বরখাস্ত হওয়ার এ চিঠি পেয়েছেন তিনি।
৮ মে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে শাসন করার সময় শিক্ষক শ্যামল কান্তি ‘ধর্মীয় কটূক্তি’ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে গত শুক্রবার বিদ্যালয়ে পরিচালনা কমিটির সভা চলাকালে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাঁর শাস্তির দাবিতে লোক জড়ো করা হয়। এরপর উত্তেজিত লোকজন তাকে মারধর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাতীয় পার্টির স্থানীয় সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমান ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষককে মারধর ও কান ধরে ওঠবস করানো হয়।
প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির দ্বন্দ্বের জেরে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
শিক্ষক লাঞ্ছিত করার ঘটনার খবর পত্রপত্রিকার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ফেসবুকে অনেকে ‘স্যরি স্যার’ লিখে নিজের কানে ধরা ছবি পোস্ট করেছেন।