খোলা বাজার২৪, রোববার, ২২ মে, ২০১৬: ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’র আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় বন্ধ হয়ে যাওয়া চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সমুদ্র বন্দররের কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে চট্টগ্রামের উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হলেও চট্টগ্রাম বন্দর ও বিমানবন্দরের তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়নি। দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি স্থাপনার তেমন বড় ধরনের ক্ষতি না হওয়ায় খুব সহসাই পুরোদমে চালু করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠান দুটির কর্তৃপক্ষ।
ঘুর্ণিঝড়ের রেশ কেটে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মাথায় শনিবার রাত থেকে বিমানবন্দর এবং চট্টগ্রাম বন্দরে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে এলেও রবিবার সকাল থেকে সকল অপারেশন শুরু হয়েছে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার রিয়াজুল কবির জানান, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুপুরে জোয়ারে রানওয়ে প্লাবিত হলেও বিমানবন্দরের কোনো ক্ষতি হয়নি। সব যন্ত্রপাতি ঠিকঠাক মতো সচল রয়েছে। তবে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়ায় রাতে বিমানবন্দর চালু না করে রবিবার সকাল থেকে চালু করা হয়েছে। সকাল থেকে সকল বিমান নির্ধারিত সিডিউল অনুযায়ী উঠানামা শুরু করেছে। কয়েকটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট ছেড়ে গেছে।
এদিকে দেশের আমদানি-রফতানির প্রধান প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম শনিবার রাত থেকে শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দর কতৃপক্ষ। রাত ১০টার পর থেকে বন্দর থেকে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে জেটিতে সব ধরনের কার্যক্রম রাতে বন্ধ থাকলেও রবিবার সকালে পুরোদমে চালু হয়েছে।
পণ্য খালাসের জন্য অপেক্ষমাণ ১৯টি জাহাজের মধ্যে ১২টি জাহাজ সকালে জোয়ারের সময় বন্দর জেটিতে প্রবেশ করছে। এ ছাড়া রাতের জোয়ারে আরও তিনটি জাহাজ জেটিতে ভেড়ানো হয় বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. জাফর আলম জানান, সকালে জোয়ারে ১২টি জাহাজ জেটিতে ভেড়ানোর পর পণ্য ওঠানামার কাজ শুরু হয়েছে।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’র সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে শনিবার সকাল ৮টা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। জাহাজ ও নাবিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বন্দর জেটি থেকে ১৯টি জাহাজ গভীর সমুদ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
মো. জাফর আলম আরও জানান, ঝড়ের তোড়ে বন্দরের অভ্যন্তরে চার নম্বর গেটের পাশে গাড়ির শেডে একটি গাছ ভেঙে পড়ে। এ সময় আমদানি করা হুন্দাই ব্র্যান্ডের একটি কারের পেছনের গ্লাস ভেঙে যায়। প্রচণ্ড বাতাসে এনসিটি এলাকায় রাখা পাঁচটি খালি কন্টেনার পড়ে গেছে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ ছাড়া ৫, ৬, ৯, ১২ ও ১৩ নম্বর শেডে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। ঝড়ো বাসাতে বিভিন্ন শেডের টিন উড়ে গেছে। ফলে শেডের ভেতরে থাকা পণ্যগুলো ভিজে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।