Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

29খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২৫ মে, ২০১৬: ইসলামিক স্টেট (আইএস) হামলা চালিয়ে বিভিন্ন হত্যাকাণ্ড ঘটানোর ‘মিথ্যা দাবি’ করে বাংলাদেশে ধর্মীয় মৌলবাদের উত্থান ঘটাতে চাইছে বলে মনে করছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠী এই হামলা চালাচ্ছে—এমন যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরাক ও সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ হারানো ও অর্থ সঙ্কটের মুখে আইএস এখন লিবিয়া, মিসর ও বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে ‘জিহাদিদের’ বেছে নিচ্ছে যাতে স্থানীয়ভাবে কম খরচে হামলা চালানো যায়।
তবে এই সম্ভাবনাকে পুরোপুরি নাকচ করে দিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘স্থানীয় বা আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থা বাংলাদেশে আইএসের উপস্থিতি প্রমাণ করতে পারেনি।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মঙ্গলবার রয়টার্সকে আরও বলেন, ‘তাদের দাবিগুলো (হত্যাকাণ্ড) পুরোপুরি মিথ্যা। কিন্তু আমাদের সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে আমরা একমত হয়েছি, বিষয়টি নিয়ে আমরা কোনো বিতর্কে যাব না। কারণ এটা একটা ভুল বার্তা দেয়।
‘বাংলাদেশে মানবাধিকার ও মুক্তচিন্তা নজিরবিহীনভাবে হুমকির মুখে পড়ছে’ ও ঢাকাকে তার ‘আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি’ রক্ষার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের আহ্বান জানানোর একদিন পর এসব কথা বললেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ফেব্র“য়ারি মাস থেকে ১৬ কোটি মানুষের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে ২৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজন মুক্তমনা ব্লগার, একজন প্রকাশক এবং দুজন সমকামী অধিকার আন্দোলনের কর্মী রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনলাইনে জঙ্গি তপরতা পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট ‘সাইট’-এর (সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ) বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটির জন্য আল-কায়েদা ‘দায় স্বীকার’ করলেও গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ১৭ জনকে হত্যার ‘দায় স্বীকার করেছে’ আইএস।
কিন্তু এ বিষয়টি সঠিক নয়—দাবি করে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘তারা শুধু স্রোতের সঙ্গে গা ভাসিয়ে দিচ্ছে। আসলে এই হত্যাকাণ্ডগুলোর সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্কই নেই।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সিরিয়া থেকে আমরা জেনেছি, আইএস ও আল-কায়েদা একত্রে কাজ করতে পারে না। কিন্তু মজার বিষয় হলো—একটি হত্যাকাণ্ডের জন্য উভয়পক্ষই দায় স্বীকার করছে।’
বাংলাদেশ সরকারের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডগুলোর সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরে থাকা জঙ্গিগোষ্ঠী আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ও জামাত-উল-মুজাহেদীন জড়িত। তারা শরীয়াহভিত্তিক মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য এই হামলা চালাচ্ছে।
ইসলামের নামে সন্ত্রাসবাদ (সারাবিশ্বে) বৃদ্ধি পেয়েছে—জানিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশ কি হুমকির মুখে আছে? আমি বলব, হ্যাঁ, আছে। কারণ এই দেশে শিক্ষার হার এখনও অনেক কম। সেই সঙ্গে রয়েছে বেকারত্ব। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিশ্বের কোনো জঙ্গি বা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বাংলাদেশে নিজেদের উপস্থিতি বা ঘাঁটি তৈরি করতে পারেনি।