Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

10kখোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০১৬: বাবাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির পেছনে মূল হোতারা রয়েছে ভারতে। এক বছরের বেশি সময় ধরে তারা হ্যাকিংয়ের পরিকল্পনা করে। আর এটা একজনের নয়, কয়েকজনের কাজ। বৃটেনের ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে সূত্রের বরাত দিয়ে এসব কথা বলা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, এসব হ্যাকারের হদিস পাওয়া সম্ভব নয়। গত ফেব্র“য়ারিতে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ৯৫ কোটি ১০ লাখ ডলার হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে হ্যাকাররা। এর মধ্য থেকে তারা মাত্র ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার হাতিয়ে নিতে সমর্থ হয়। এই অর্থ লোপাটের ঘটনা নিয়ে তদন্ত করছে একাধিক সংস্থা। তবে এখনো পর্যন্ত ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কারো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
মেইল অনলাইনকে একটি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই রাজকোষ কেলেঙ্কারি কোনো একজন ‘হোতা’র কাজ নয়। এই কাজে একাধিক ব্যক্তি জড়িত এবং তারা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এই ঘটনার পরিকল্পনা করেছে।
সূত্রটি বলেছে, ‘এতে সংশ্লিষ্টরা ভারতে রয়েছে এবং তারা সম্ভবত প্রক্সি (ইন্টারনেটে নিজের প্রকৃত অবস্থান গোপন করে ভার্চুয়াল অবস্থান দেখানোর পদ্ধতি) ব্যবহার করছে। সে কারণেই তাদের ধরা যাচ্ছে না। তারা ভারতের কেন্দ্রেই অবস্থান করছে এবং কয়েকজন রয়েছে বাইরে। কারিগরি দিক থেকে তারা এতটাই শক্তিশালী যে তাদের সন্ধান পাওয়াই সম্ভব নয়।’ ওই সূত্রটি আরো বলেছে, ‘এসব ব্যক্তি খুব সহজেই নিজেদের লুকাতে পারে এবং ২/৩ মিনিটের মধ্যেই হারিয়ে যেতে পারে।’
সূত্রটি জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ লোপাট হওয়া অর্থের কিছুটা উদ্ধার করতে পারলেও পুরোটা পারেনি এবং এর হোতাদের সারাজীবন নিশ্চিন্তে পার করে দেয়ার জন্য দেড় কোটি ডলারই যথেষ্ট।
এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনকে ফিলিপাইনে শনাক্ত করা গেলেও কাউকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি। ফিলিপাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জন গোমেজ অবশ্য ফিলিপাইনের ব্যাংকে পৌঁছানো ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার উদ্ধারে দেশটির কর্তৃপক্ষের ওপর আস্থা রেখেছেন।
এদিকে ফিলিপাইনের অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং কাউন্সিলের (এএমএলসি) নির্বাহী পরিচালক জুলিয়া আবাদ জানিয়েছেন, কিম ওংয়ের কাছে থাকা দেড় কোটি ডলার ফেরত দেয়া হয়েছে। আরো ২ কোটি ৮০ লাখ ডলার রয়েছে ম্যানিলার ক্যাসিনো সোলেয়ারে এবং ১ কোটি ৭০ লাখ ডলার রয়েছে রেমিট্যান্স কোম্পানি ফিলরেমের কাছে। আরও ১ কোটি ২০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের ক্যাসিনো সিস্টেমের মধ্যেই রয়েছে বলে মনে করেন জুলিয়া আবাদ। তবে ম্যানিলার একজন বেসরকারি গোয়েন্দা অগাস্টাস এসমেরাল্ডা রয়টার্সকে বলেছেন, এই ঘটনাকে ব্যাংকের হ্যাকিং হিসেবে দেখা উচিত হবে না। তিনি বলেন, ‘এটা অনেকটা হ্যাকারদের নিযুক্ত করে অর্থ চুরির ঘটনার মতো। এর পিছনে রয়েছেন এমন ব্যক্তি যিনি ব্যাংক, অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং সিস্টেম ও ক্যাসিনো সম্পর্কে জানেন। আমার কাছে এটাকে মনে হয়েছে আধুনিক সময়ের ওশান’স ১১। একে বলা যেতে পারে ম্যানিলা ১২।’
উল্লেখ্য, ওশান’স ১১ একটি হলিউড সিনেমা যাতে লাস ভেগাসের একটি ক্যাসিনো থেকে অর্থ চুরি করে ১১ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল।