খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ৩১ মে ২০১৬: রাঙ্গামাটিতে মোটরবাইক চুরিতে জড়িত একটি শক্তিশালী চোরচক্রের ১১ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চুরি করা পাঁচটি মোটরবাইকসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত অভিযানে এসব মোটরবাইক ও সরঞ্জামসহ চোরচক্রের সদস্যদের আটক করতে সক্ষম হয় রাঙ্গামাটির কোতোয়ালি থানা পুলিশ। সোমবার দুপুরে কোতোয়ালি থানায় আয়োজিত এক প্রেসব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত কয়েক মাসে রাঙ্গামাটি শহর থেকে একের পর এক মোটর সাইকেল চুরির ঘটনায় উদ্বিগ্ন ছিল শহরবাসীসহ পুলিশ। শেষে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওইসব মোটরসাইকেল চোরচক্রটিকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। কয়েক দিনের প্রচেষ্টার পর রোববার রাতে রাঙ্গামাটি শহর এবং চট্টগ্রামের রাউজানে অভিযান চালিয়ে ৫টি চোরাই মোটর সাইকেল, মোটরসাইকেল খোলা, মেরামত, নাম্বার প্লেট পরিবর্তনসহ চুরির কাজে ব্যবহার করা বিপুল সরঞ্জাম উদ্ধারসহ চোরচক্রের ১১ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা সবাই রাঙ্গামাটি শহরের বাসিন্দা। সোমবার দুপুরে উদ্ধার করা মোটরসাইকেল, চুরির কাজে ব্যবহার করা বিভিন্ন সরঞ্জামসহ আটককৃতদের সাংবাদিকদের সামনে হাজির করে পুলিশ।
এসময় জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোয়েন্দা) মো: শহীদুল্লাহ সাংবাদিকদের সামনে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। আটককৃতদের নাম উল্লেখসহ তিনি জানান, পুলিশের বিশেষ টিম পরিচালিত অভিযানে মোটরসাইকেল চোরচক্রের সঙ্গে জড়িত শহরের কর্মচারী কলোনির মো. আবুল ফজল (৩৮), কল্যাণপুরের সুমন চাকমা (২৪), ডিসিবাংলো এলাকার আলা উদ্দিন (৩৬), চট্টগ্রাম বাঁশখালীর এরশাদ(২৯), পৌর এলাকার তারেক শাওন আমান (২৭), মহসিন কলোনির আবদুল মাবুদ (২৯), গর্জনতলীর অংচিমং মারমা (২৫), গর্জনতলীর নিপন ত্রিপুরা (২৬), রির্জাভবাজারের মো. মনছুর (২৮), কলেজগেট এলাকার রবিউল হাসান রাকিব (২৩) ও এসপি অফিস সংলগ্ন এলাকার মো. হুমায়ুন কবিরকে (২৯) আটক করা হয়েছে। সোমবার আটকৃতদের আদালতে চালান দেয়া হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, গত কয়েক মাস ধরে রাঙ্গামাটি শহরে মোটরসাইকেল চুরির সূত্র ধরে প্রথমে দু’জনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাঙ্গামাটি শহরসহ বাইরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মোটরসাইকেল চোরচক্রের ১১ সদস্যকে আটক করা হয়। গোপন তথ্যে পাওয়া সংবাদের ভিত্তিতে রোববার রাতে পাশের জেলা চট্টগ্রামের রাঙ্গুনীয়া এলাকা থেকে বিভিন্ন কোম্পানির ৫টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া শহরের ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পেছনে আহম্মদ নবীর ছেলে তারেক শাওন আমানের (২৭) বাসা থেকে মোটরসাইকেলের যাবতীয় সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে ডিজিটাল নাম্বার প্লেট, সেসিস ও ইঞ্জিন নাম্বার তৈরির মেশিন, বিআরটিএ’র ভুয়া সীলমোহর, পাঞ্চিং মেশিন, গ্যাস বার্নার, গাড়ি বিক্রির ভুয়া স্ট্যাম্প, প্রথম শ্রেণি ম্যাজিস্ট্রেটের ভুয়া সীল, ভুয়া নাম্বার তৈরির ফর্মেট, তালা খোলা ও মেরামতের যন্ত্র ও গাড়ি রং করার স্প্রে মেশিন। পুলিশ সুপারের নির্দেশে অভিযানে অংশ নেন কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রশিদ, এসআই সৌরজিৎ, মো. ইউছুফসহ পুলিশের বিশেষ টিমের সদস্যরা।
