Fri. Jun 20th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

5kখোলা বাজার২৪, বুধবার, ০১ জুন ২০১৬: পুরো আইপিএল জুড়েই সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামটি ছিল উৎসবের আমেজে। আর রোববার রাত থেকে তো পুরোদমে উৎসব চলছে। কারণ তাদের ছেলে যে ভারত থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসছেন। হয়েছেন আইপিএলের সেরা উদীয়মান ক্রিকেটার। বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে তাদের মুস্তাফিজ।
আইপিএল ফাইনালে এই কাটার মাস্টারের খেলা দেখতে রাতে তেঁতুলিয়ার উৎসাহী ছেলেপুলেরা জোগাড়-যন্ত্র করে একটা সাদা পর্দা আর একটা টিভি প্রোজেক্টরও বসিয়ে ছিলেন গ্রামের মাঠে। বড় পর্দার সামনে খেলা দেখেন সাত-আটশো গ্রামবাসী। ম্যাচ শেষে শুরু হয়ে যায় উৎসব।
এখনও উৎসবে মাতোয়ারা। সারা গ্রাম মেতে রয়েছে তাদের প্রিয় মুস্তাফিজের সাফল্যে। সামনে আরো বড় উৎসব। ঘরের ছেলের জন্য অধীর অপেক্ষায় রয়েছে তেঁতুলিয়া। সোমবারই ঢাকা পৌঁছেছেন তাদের নায়ক। তাকে বীরের মত বরণ করে নেয়া হয়েছে।
ঢাকায় কিছু কাজ শেষ করে মঙ্গলবার পা বাড়াবেন বাড়ির পথে। আর তখনই শুরু হবে আসল উৎসব। সেই মুহূর্তের দিকেই মুখিয়ে রয়েছ মুস্তাফিজের গ্রাম।
সোমবার সন্ধ্যায় মুস্তাফিজুরের সেজো ভাই মুখলেছুর রহমান পল্টু বলেন, ‘’ভাই তো আজই ঢাকায় এসে গেছে। কাল হয়তো ওখান থেকে যশোরে আসবে প্লেনে। আমরা গাড়ি নিয়ে যাব যশোরে ওকে আনতে।”
গ্রামে আসার পরই হবে উৎসব।
মুস্তাফিজের দল সানরাইজ হায়দরাবাদ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় যতটা না খুশি তেঁতুলিয়া, তার চেয়েও বেশি আনন্দ তারা পেয়েছে তাদের গ্রামের ছেলে সেরা উদীয়মান ক্রিকেটার হওয়ায়। পল্টু বললেন, ‘‘আজও তো সারা দিন ধরে বাড়িতে শ-দেড়েক আত্মীয়-বন্ধু-প্রতিবেশীর ভিড়। সবাই অভিনন্দন জানাতে এসেছেন আব্বা-আম্মিকে। মুস্তাফিজ এলে আরো লোক আসবে হয়তো।’’
আগের ম্যাচে হ্যামস্ট্রিং চোটের জন্য খেলতে না পারায় রোববারও খেলতে পারবেন কি না, তা ঠিক ছিল না। পল্টু বলেন, ‘‘রোববারই দুপুরে ভাই ফোন করে জানায় ও খেলছে। সারা গ্রাম সেই খবরে চাঙ্গা হয়ে ওঠে আর মাঠে বড় পর্দা লাগানোর তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়।’’
মঙ্গলবার ছেলে ঘরে ফিরবেন কি না নিশ্চিত নন বাবা আবুল কাশেম। তবে মা মাহমুদা খাতুন ঠিক করে নিয়েছেন, ছেলের প্রিয় দেশি মুরগীর ঝোল আর খিচুড়ি রান্নার জোগাড় রাখবেন। যে মুহূর্তে ছেলের আসার খবর পাবেন, রান্না শুরু করে দেবেন।
আবুল কাশেম তেঁতুলিয়া থেকে ফোনে বলেন, ‘‘ওর মা তো ছেলের জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছে। এত দিন ছেলেকে ছেড়ে রয়েছে তো। ওকে বোঝাচ্ছি, মুস্তাফিজুর এখন আর শুধু আমাদের ছেলে নয়, সারা বাংলাদেশের। এমনকী দেশের বাইরেও ওকে সবাই ভালবাসে। তাই এখন ওকে প্রায়ই এ রকম অনেক দিন না দেখে থাকতে হবে আমাদের। তবু মায়ের মন তো, মানে না। ছেলের প্রিয় খাবার রান্নার জন্য ছটফট করছে। ও তো চার ভাই আর দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট। তাই সবার বড় আদরের।’’
তবে মায়ের কোলে বেশি দিন থাকা হবে না মুস্তাফিজের। কারণ কয়েকদিন পরেই হয়তো ইংল্যান্ডে পাড়ি দেবেন কাউন্টিতে খেলতে।
আইপিএলে খেলতে আসার আগে আব্বা-আম্মিকে গাড়ি কিনে দিয়ে এসেছিলেন মুস্তাফিজ। সেই গাড়ি নিয়েই যশোর থেকে মুস্তাফিজুরকে আনতে যাবেন তার ভাইয়েরা। তার পর যা হবে, তা তেঁতুলিয়া বোধহয় কোনো দিনই দেখেনি। মুস্তাফিজুরও না।