খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ০২ জুন২০১৬: পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বাংলাদেশি ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়েরই গবেষক-ছাত্রকে দোষী সাব্যস্ত করেছে সিউড়ি জেলা আদালত। সফিকুল ইসলাম নামে ওই অভিযুক্তও বাংলাদেশের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণা করবেন আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক মহানন্দ দাস।
বছর দুয়েক আগে বাংলাদেশ থেকে মাধ্যমিক পাশ করে বিশ্বভারতীতে পড়তে আসা ছাত্রীটিকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। সে সময় দ্বাদশ শ্রেণিতে পাঠরতা ছাত্রীটি নাবালিকা ছিল। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৩ (মারধর), ৩৪২ (বে আইনি আটক), ৩৫৪(বি) (বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি), ৫০৬ ধারার (প্রাণনাশের হুমকি) পাশাপাশি পকসো আইনে ৪ ধারাতেও (নাবালিকার উপর যৌন হেনস্থা) দোষী সাব্যস্ত হয়েছে সফিকুল। তার সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
বাংলাদেশের রায়গঞ্জ জেলার সিরাজগঞ্জের দাদপুর গ্রামের বাসিন্দা সফিকুলের সঙ্গে বিশ্বভারতীতে এসেই আলাপ হয়েছিল নির্যাতিতার। একই দেশের বাসিন্দা হওয়ায় ওই গবেষক-ছাত্রকে ভরসা করত বলেই জানিয়েছে সে। নাবালিকার পরিবারের সঙ্গেও সফিকুলের পরিচিতি গড়ে ওঠে। ছাত্রীটির পরিবারের অভিযোগ, ২০১৪ সালের অগস্ট মাসে সফিকুল বিশ্বভারতী লাগোয়া গুরুপল্লিতে নিজের ভাড়া ঘরে ছাত্রীটিকে সাহায্য করার বাহানা করে ডেকে পাঠায়। এরপর সেখানে ধর্ষণ করে তাকে। সেই ছবি নিজের মোবাইলে তুলে রেখে এরপর সে ছাত্রীটিকে ভয় দেখিয়ে তার ঘরে আসতে বাধ্য করত। সেখানে আরো বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করা হয় তাকে।
আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে ছাত্রীটি জানায়, ওই বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত মোবাইলের ছবির ভয় দেখিয়ে প্রায়ই গুরুপল্লির ঘরে তাকে যেতে বাধ্য করা হতো। একদিন তারই দেশের অন্য সহপাঠীদের কাছে মোবাইলের ছবির কথা শুনে সে তার মা’কে বিষয়টি জানায়। নাবালিকার পরিবারের তরফে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে বোলপুর থানায় এ ব্যাপারে অভিযোগ জানানো হয়। ওই বছরের ৬ ডিসেম্বর সফিকুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সিউড়ির বিশেষ আদালতে এই মামলায় গত দেড় বছরে ১৯ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সরকারি আইনজীবী সমিদুল আলম বলেন, ‘‘বিদেশি ছাত্রের হাতে তারই দেশের নাবালিকা কোনও ছাত্রীর ধর্ষণ মামলার বিচার জেলায় প্রথম। যে সমস্ত ধারাগুলিতে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, তাতে তার (সফিকুলের) সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। ভারতীয় আইনের ২০৯ নম্বর রুল অনুযায়ী, বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের বিচারের প্রক্রিয়াটি প্রতি মুহূর্তে বাংলাদেশের দূতাবাসকে জানানো হচ্ছে।’’