Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

31খোলা বাজার২৪, শনিবার, ০৪ জুন ২০১৬ : অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সমালোচনা পরিপ্রেক্ষিতে বাজেটকে ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ বলার ব্যাখ্যা দিয়েছে বিএনপি।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “প্রতিক্রিয়াশীল বাজেট এজন্য বলে যে, এই বাজেট মানুষের বিপক্ষে, গণবিরোধী।
“কৃষিজাত যন্ত্রপাতির উপর কর বাড়াচ্ছেন, এটা কি গণবিরোধী নয়? আপনি মধ্যবিত্ত চাকরিজীবীদের অবসরের অবলম্বন সঞ্চয়পত্রের উপর সুদ কমিয়ে দিয়েছেন, তার উপর উৎসে কর কেটে নেবেন, এটা কি গণবিরোধী নয়? রুটি-আটার উপর কর বাড়িয়েছেন, এটা কি গণবিরোধী নয়?”
“যারা দেশকে বিভাজন করেন, উচ্চবিত্তকে আরও উচ্চ করেন, তাদের টাকা আরও বাড়ান এবং যারা গরিব তাদের আরও গরিব করেন, তারা হচ্ছেন প্রতিক্রিয়াশীল।”
অর্থমন্ত্রী গত বৃহস্পতিবার সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের বাজেট প্রস্তাবের পর সংসদে না থাকা বিএনপির পক্ষে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় একে ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ বলেছিলেন রিজভী।
তার প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে মুহিত বলেন, ‘অস্তিত্বহীনরা’ তার দেওয়া বাজেটকে ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ বলছে।
অর্থমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নয়া পল্টনে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, “আমরা মনে হয়, অর্থমন্ত্রী প্রতিক্রিয়াশীল শব্দটির অর্থ ঠিকমতো বুঝতে পারেননি।
“যেহেতু উনি (অর্থমন্ত্রী) গণবিরোধী বাজেট করেছেন। সুতরাং প্রতিক্রিয়াশীল শব্দটি উনার পক্ষে এড়িয়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক।”
মুহিতকে ‘গুণী মানুষ’ অভিহিত করে নিজের ছাত্র আন্দোলনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে শব্দচয়ন ‘বোঝার’ ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রীর সেই অভিজ্ঞতার অভাবকে গুরুত্ব দেন রাকসুর সাবেক ভিপি ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রিজভী।
“যারা ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করে এসেছেন, মানুষের পক্ষে-বিপক্ষে যেসব শব্দ, টার্ম এন্ড টার্মিওলোজি ব্যবহার করা হয়, তাদের জানার কথা। যেহেতু উনার (মুহিত) ক্যারিয়ারটাই হচ্ছে- আমলা ছিলেন, উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন, তারপরে ওখান থেকে মন্ত্রিত্ব করেছেন, তার প্রতিক্রিয়াশীল শব্দটা না জানাটা স্বাভাবিক।”
এরশাদের সামরিক শাসনামলে মুহিতের বাজেট দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে রিজভী বলেন, “উনি এরশাদের মন্ত্রী ছিলেন, গণতন্ত্র হত্যাকারী একজনের উনি মন্ত্রী ছিলেন। আর ভোটারবিহীন সরকারের উনি একজন মন্ত্রী। উনি কখনোই কোনো গণতান্ত্রিক সরকারের মন্ত্রী হয়নি। সুতরাং উনার মাউন্ডসেটটি হচ্ছে প্রতিক্রিয়াশীল।”
প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, “যাদের আয় ১০ লক্ষ টাকা, তাদের ৩২ শতাংশ কর বৃদ্ধি করা হয়েছে। আর যাদের আয় সাড়ে ৪৭ লক্ষ টাকা, তাদের ১৩ শতাংশ কর বৃদ্ধি করা হয়েছে।
“এটা হচ্ছে প্রতিক্রিয়াশীলতা, এটা সাধারণ মানুষের পক্ষে যায়নি, এটা গরিব মানুষের পক্ষে যায়নি, এটা খেটে খাওয়া মানুষের পক্ষে যায়নি। এটা লুটেরাদের পক্ষে গেছে।”
বাজেটে ‘মিথ্যা’ পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।
“উনি (অর্থমন্ত্রী) বলেছেন, দেশে বেকারত্বের হার ৪ শতাংশ। অদ্ভুত ব্যাপার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উন্নত দেশগুলোতেই বেকারত্বের হার ৫ শতাংশের মতো।দেশের অর্থনীতিকবিদরা বলেছেন, ২২ থেকে ২৪ শতাংশের মতো বেকারত্বের হার হতে পারে। সেটা কী করে অর্থমন্ত্রী ৪ শতাংশ বলতে পারেন?”
অপ্রদর্শিত আয়ের বিষয়ে প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো দিক-নির্দেশনা না থাকার বিষয়ে রিজভী বলেন, “এই অপ্রদর্শিত আয় যে কালো টাকা বলছেন, সাদা করার ব্যাপারে কেন সুস্পষ্টভাবে কথা বলছেন না। উনি যে কত বড় প্রতিক্রিয়াশীল, এই ধরনের একটি অন্যায়-লুটেরাতন্ত্রকে উনি যে বৈধতা দিচ্ছেন, তা প্রমাণিত।”
দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই প্রতিক্রিয়া জানানোর সঙ্গে রিজভী বলেন, বাজেটের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে বিএনপির পক্ষ থেকে শিগগিরই বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।