খোলা বাজার২৪, রোববার, ০৫ জুন ২০১৬ : পুলিশ হেডকোয়ার্টারে কর্মরত পুলিশ সুপার ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খাতুন ওরফে মিতু আক্তারকে (৩২) নিখুঁত নিশানায় একটি মাত্র গুলিতেই খুন করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত পরিকল্পিত এবং সন্দেহের তীর জঙ্গিদের দিকে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
আজ রবিবার সকাল ৬টা ৪০ মিনিট থেকে ৬টা ১০ মিনিটের মধ্যে নগরীর জিইসি মোড়ে মোটরসাইকেলে আসা তিন দুর্বৃত্ত প্রথমে তাকে মোটরসাইকেল দিয়ে ধাক্কা মারে। এরপর উপর্যুপুরি ছুরিকাঘাত করে এবং সবশেষে মাথার বাম পাশে কপালের কাছে গুলি করে।
এ সময় সৌভাগ্যবশত মাহির আক্তার নামে ছোট্ট ছেলেটি দৌড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। হত্যাকাণ্ডের পরপরই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন নগর পুলিশের কমিশনার ইকবাল বাহার। তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, অতীতে বাবুল আক্তার জঙ্গি দমনে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছিলেন। এতে সংশ্লিষ্টরা সংক্ষুব্ধ হতে পারেন। এর জের ধরে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা করছি আমরা। তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত খুনি, কারণ ইত্যাদি বেরিয়ে আসবে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বশির আহমেদ জানান, সেভেন পয়েন্ট সিক্স টুর মতো খুব ছোট আকারের পিস্তল থেকে নিখুঁত নিশানায় গুলি করা হয়েছে। মুখের বাম পাশে কপালের নিচে এক গুলিতেই মৃত্যু নিশ্চিত করেই পালিয়ে গেছে খুনিরা। ঘটনাস্থল থেকে মোট চারটি কার্তুজ উদ্ধার করেছি। এর মধ্যে একটি ব্যবহৃত, তিনটি অব্যবহৃত। প্রাথমিক ভাবে নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। বিস্তারিত ময়নাতদন্ত রিপোর্টে জানা যাবে।
ঘটনার পর পরপরই তদন্তকাজ শুরু করেছেন গোয়েন্দারা। নগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) পরিতোষ ঘোষ জানান, খুনিদের শনাক্তের জন্যে ওয়েল ফুডের ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ এবং সড়কের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার মোক্তার আহমদ বলেন, ইতিমধ্যে পুলিশ তদন্তকাজ শুরু করে দিয়েছি। শিগগির খুনিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে এ হত্যাকাণ্ডে জঙ্গিরাই জড়িত। কারণ বাবুল আক্তার জঙ্গি দমনে সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন।
বাবুল আক্তারের ব্যাচমেট র্যাব-১ এর কর্মকর্তা এসএম তানভীর আরাফাত ঢাকা থেকে জানান, স্ত্রীর দুঃসংবাদ শোনার পর থেকে বাবুল আক্তারের ঘন ঘন অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন। তারপরও তাকে সান্ত্বনা দিয়ে চট্টগ্রাম পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মাহমুদ বলেন, মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।