Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

30kখোলা বাজার২৪, রোববার, ১২ জুন ২০১৬: সাব ডিজিটাল সেন্টারের কল্যাণে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অধুনালুপ্ত ছিটমহল দাশিয়ার ছড়ার মানুষের জীবনযাত্রা দিন দিন বদলে যাচ্ছে । জীবন ও জীবিকার তাগিদে নৈমেত্তিক প্রয়োজনে প্রতিদিনই বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ সেবা নিচ্ছেন এই ডিজিটাল সাব সেন্টার থেকে। দীর্ঘ ৬৮ বছরের অন্ধকার জীবনের অবসান ঘটিয়ে প্রযুক্তির আলোক বর্তিকা হাতে নিয়ে প্রযুক্তির সিঁড়ি বেয়ে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এ অঞ্চলের বঞ্চিত মানুষ গুলো। এখন আর হাত গুটিয়ে বসে নেই তারা। প্রশংসা পত্র, পরিচয়পত্র কিংবা অনলাইনের যে কোন কাজের জন্য শহরে যেতে হয় না তাদের। ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষাও করতে হয় না লাইনে দাড়িয়ে। সাব ডিজিটাল সেন্টারে সামান্য অর্থের বিনিময়ে প্রয়োনীয় সকল অনলাইন সেবা পাওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা ক্রমান্বয়ে এগিয়ে যাচ্ছে উন্নতির পথে ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শনিবার বিকেল ৫টার দিকে ফুলবাড়ী উপজেলার কালিরহাট বাজারে দাশিয়ার ছড়ার সাব সেন্টারে লোক জনের ভীড়। আকাশ,সুমন,হিরামনী,রুবেল,মাসুদসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির কাজ করছেন।

উপস্থিত লোকজনের সাথে কথা বললে তারা জানান, বিভিন্ন রকম সনদ উত্তোলন, ই-মেইল, ইন্টারনেট, অনলাইনে বিভিন্ন সরকারি ফরম পূরণ, বিদুৎ বিল প্রদান, কম্পিউটার প্রশিক্ষন,চাকুরীপ্রার্থীদের বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার সময়সূচী ও ফলাফল,ভর্তিচ্ছুদের পরীক্ষার সময়সূচী ও ফলাফল এমনকি বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল জানতে আর কোন প্রকার বিড়ম্বনায় পড়তে হয় না এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের। এর জন্য কোন প্রতিষ্ঠান কিংবা কোন দপ্তরে দৌড়ঝাপ করতে হয় না। এখান থেকেই পরিক্ষার ফলাফল দ্রুত জানা যায় এবং তা ডাউনলোড করে ফলাফলের প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করা যায়।

তারা বলেন,অধুনালুপ্ত ছিটমহলে অনলাইনের কাজ আরও সুবিধাজনক হয়েছে ফাইবার অপটিক্যাল বোন্ডব্যান্ড নেটওয়াক থাকায় কারনে। উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে ফাইবার অপটিক্যাল সংযোগ নাই। আমাদের সাব ডিজিটাল সেন্টারের ফাইবার অপটিক্যাল বোন্ডব্যান্ড নেটওয়ার্ক থাকায় ইন্টারনেটের গতি বেশি। তাই এ অঞ্চলের মানুষের পাশাপাশি দূরদুরান্ত থেকে চাকুরীপ্রার্থী লোকজনও আসেন অনলাইনের কাজ নিয়ে। যারা বিদেশে অবস্থান করছেন তারাও তাৎক্ষনিক ভাবে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন কোনরকম ঝামেলা ছাড়াই। স্কাইপিতে কথাও বলতে পারছেন বাড়ীতে রেখে যাওয়া পিতা-মাতা স্ত্রী-সন্তানদের সাথে। বিদ্যুতের লোড শেডিংয়ের সময়ও যাতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেবা প্রদান করা যায় সেজন্য স্থাপন করা হয়েছে সোলার সিস্টেম।

কালীর হাটের বাসিন্দা আলতাফ হোসেন, মিজানুর রহমান ও আশরাফুল ইসলাম বলেন, ছিটমহল বিনিময়ের অল্প কিছু দিনের মধ্যেই আমাদের অনেক স্বপ্ন,প্রত্যাশা পুরণ হয়েছে। এক সময়ের অবরুদ্ধ ছিটমহলের প্রতিটি ঘরে ঘরে এখন মিটমিট করে জ্বলে বিজলী বাতি,শা শা শব্দে বাতাস দেয় বৈদ্যুতিক পাখা। হাজার হাজার মাইল দুরের স্বজনের সাথে নিমিশেই কথা হয় ঘরে বসে। এ প্রত্যাশা পূরণে আমরা আসলেই সত্যিই গর্বিত,কৃতজ্ঞ।

সাব ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা নুর হোসেন বলেন, আমার কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় উপকরণ সল্পতা থাকার সত্বেও সেবা প্রদান করতে করতেছি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট আমার আবেদন আরও প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ দ্রুত সরবরাহ করা হলে আরো নিত্য নতুন সেবা পাবে এ অঞ্চলের মানুষ।

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবেন্দ্রনাথ উরাঁও বলেন, অধুনালুপ্ত দাশিয়ার ছড়ার মানুষ গুলো এখন সব দিক দিয়ে দ্রুত উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।