খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১৫ জুন ২০১৬: গাজীপুরে আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যায় প্রধান আসামি বিএনপি নেতা নূরুল ইসলাম সরকারসহ ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ১০ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত দুই আসামির মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুর ১টার দিকে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
যে ছয়জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে নূরুল ইসলাম সরকার ছাড়া বাকি পাঁচজন হলেন—নূরুল ইসলাম দীপু, মাহবুবুর রহমান, শহীদুল ইসলাম শিপু, হাফিজ ওরফে কানা হাফিজ ও সোহাগ ওরফে সরু।
এর আগে গত ৮ জুন আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষে এ রায়ের দিন নির্ধারণ করা হয়। ওই দিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রুনা নাহরীন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মঞ্জু নাজনীন।
আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, এ এম মাহবুবউদ্দিন খোকনসহ কয়েকজন আইনজীবী।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৪ সালের ৭ মে গাজীপুরের টঙ্গীর নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় সাংসদ আহসানউল্লাহ মাস্টারকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনার পরদিন তাঁর ভাই মতিউর রহমান টঙ্গী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ২০০৪ সালের ১০ জুলাই অভিযোগপত্র দায়ের করে পুলিশ।
ঢাকার একটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল বিএনপি নেতা নূরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। খালাস দেন দুই আসামিকে। দণ্ডাদেশপ্রাপ্তদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন, ১৭ জন কারাগারে, বাকি নয়জন পলাতক।
পরে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স এবং গত ২১ জানুয়ারি থেকে জেল আপিলের শুনানি শুরু হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৮৩ ও ১৯৮৮ সালে দুবার পুবাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আহসানউল্লাহ মাস্টার। পরে ১৯৯০ সালে গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। গাজীপুর-২ আসন থেকে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।