খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন ২০১৬: সন্তানের সারা দিনের ছোট ছোট ইচ্ছে, আবদার, আহ্লাদগুলো জমে থাকে রাতে বাবার বাড়ি ফেরা অপেক্ষায়। কিন্তু সেই বাবা কি সবসময় বুঝতে পারেন সন্তানের এই ইচ্ছের কথাগুলো?
বাবার কাছে সন্তান চায় নির্ভরতা। সন্তানদের দিকে বাবার একটু নজর, তাদের কথাবার্তার বন্ধু হয়ে মিশে যাওয়া, তাদের কাজের ক্ষেত্রে পরামর্শ দেয়া সন্তানের মনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির জন্ম দেয়। আর যদি উল্টো হয় অর্থাৎ বাবার তিরস্কারে যদি বেড়ে ওঠে সন্তান, তাহলে সে আর আত্মবিশ্বাসী হতে পারে না। ফলে শক্তিশালী ব্যক্তিত্বও গড়ে ওঠে না।
মায়ের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্কটা জন্মের আগে থেকেই। সন্তান যখন গর্ভে বেড়ে উঠছে, তখনই মায়ের শরীরে ও অনুভবে সন্তানের অস্তিত্ব। বাবা কিন্তু ধীরে ধীরে সন্তানের কাছাকাছি হন। এমনকি কোনো কোনো বাবা জন্মের পর সন্তানের প্রতি রুষ্টও হন, স্ত্রীর ভালোবাসা ভাগ হয়ে যাচ্ছে বলে।
একদিন এই শিশুই বাবার কাছাকাছি হয়। বিশেষ করে বেড়ে ওঠা, কাজ বেছে নেয়ার সময়টাতে বাবার সঙ্গ, বাবার পরামর্শ সন্তানের জীবনের ইতিবাচক গুণাবলিকে প্রগাঢ় করে। শিক্ষক, আত্মীয়, বন্ধুদের কাছ থেকে নেয়া পরামর্শও কাজে লাগে, কিন্তু এ সময় সন্তানের প্রতি বাবার দৃষ্টিভঙ্গি নেতিবাচক হলে সন্তান নির্ভরতা পায় না। অনেক বাবাই সন্তানের প্রতি এ দায়িত্বটি পালন করতে পারেন না। কাজের চাপে, রুটিরুজির চিন্তায়, সংসার সামলে বাবা সন্তানের দিকে মনোযোগ দিতে পারেন কম।
সন্তান আগ্রহ নিয়ে কিছু বললো, কিন্তু বাবা একেবারেই পাত্তা দিলেন না। বাবা বুঝতেও পারলেন না, এই একটু অবহেলা সন্তানের মনকে করে তুলছে বিষণœ, কাজকে করে তুলছে স্থবির। তার উৎসাহে ভাটা পড়ছে। সন্তানের জন্য বাবা কতটা দরকারি, তা বাবা নিজেই বোঝেন না। যখন বুঝতে পারেন, তখন হয়তো দেরি হয়ে যায়, মনের বন্ধন শিথিল হয়ে যায় সন্তানদের সঙ্গে।
তাই বাবাকে অবশ্যই বন্ধুর মতো হতে হবে। সন্তানের জীবনযাপনে পাশে থেকে বন্ধুর মতো বুদ্ধি-পরামর্শ দিতে হবে। এখনকার বাবারা অনেক বেশি কর্মব্যস্ত সময় কাটান। সারাদিন অফিস করে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফেরেন কিংবা বাসায় এসেও অফিসের কাজ করেন। সন্তানকে দেয়ার মতো তার কাছে কোনো সময়ই আর থাকে না। ফলে বাবার সঙ্গে সন্তানদের দূরত্ব তৈরি হয়। আর ছোটবেলায় সম্পর্কের যে দূরত্ব সে দূরত্ব পরে পরিণত বয়সেও দূর হয় না। তাই আদর্শ বাবা মাত্রই সন্তানদের সঙ্গে বন্ধুভাবাপন্ন হবেন সেটাই কাম্য।