খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১৭ জুন ২০১৬: স্থান ও স্থাপনার ভাড়ার বিপরীতে গত চার বছরের মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) হিসেবে ছয় মোবাইল ফোন অপারেটকে ৯৫ কোটি টাকা পরিশোধ করতে বলেছে আপিল বিভাগ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বৃহৎ করদাতা ইউনিট ছয় অপারেটরকে ভ্যাট বাবদ ওই অর্থ পরিশোধের নির্দেশ দিলেও কোম্পানিগুলোর রিট আবেদনে হাই কোর্ট তা স্থগিত করেছিল।
এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে গেলে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার তা নিষ্পত্তি করে আদেশ দেয়।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামান শুক্রবার বলেন, হাই কোর্ট অর্থ পরিশোধের আদেশ স্থগিত করেছিল। আপিল বিভাগ তা ‘সংশোধন করে’ অপারেটরদের ভ্যাটের অর্থ পরিশোধ করতে নির্দেশ দিয়েছে। সেই সঙ্গে হাই কোর্টে রুলের শুনানি করতে বলেছে।
“ফলে অপারেটরদের ওই অর্থ পরিশোধ করতে হবে। আদালত বলেছে, হাই কোর্টে যদি তারা (অপারেটরগুলো) জিতে যায়, তাহলে অর্থ ফেরত পাবে। তা না হলে অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারেই থাকবে।”
স্থান ও স্থাপনার ভাড়ার বিপরীতে ভ্যাট যথাযথভাবে পরিশোধ না করার অভিযোগে চলতি বছর জানুয়ারিতে মোবাইল অপারেটরগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করে বৃহৎ করদাতা ইউনিটের গোয়েন্দা শাখা। পরে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বৃহৎ করদাতা ইউনিটের কমিশনারের (মূসক) কাছে যায়।
উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে গত এপ্রিলে বৃহৎ করদাতা ইউনিটের কমিশনার (মূসক) গ্রামীণফোনকে ১৯ কোটি, বাংলালিংককে ৩৪ কোটি, এয়ারটেলকে ১৬ কোটি, রবিকে ১৫ কোটি, সিটিসেলকে সাত কোটি ও টেলিটককে চার কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে নির্দেশ দেয়।
২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত সময়ের ভ্যাট হিসেবে ওই অর্থ পরিশোধ করতে বলা হয় কোম্পানিগুলোকে।
কমিশনারের ওই আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, এয়ারটেল ও রবি হাই কোর্টে আলাদা রিট আবেদন করে। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ৬ জুন হাই কোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ রুল জারি করে। সেইসঙ্গে অর্থ পরিশোধের আদেশের কার্যকারিতা তিন মাসের জন্য স্থগিত করে দেয়।
হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে, যা চেম্বার বিচারপতির আদালত হয়ে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামান। অপারেটরগুলোর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ব্যারিস্টার ফিদা এম কামাল ও এ এম আমিন উদ্দিন।
এয়ারটেলের কৌঁসুলি আমিন উদ্দিন শুক্রবার বলেন, “অর্থ দেওয়ার আদেশ হাই কোর্ট স্থগিত করেছিল। ওই আদেশ স্থগিত করে আপিল বিভাগ ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে বিচারপতি জিনাত আরার নেতৃত্বাধীন হাই কোর্ট বেঞ্চে রুল নিষ্পত্তি করতে বলেছে।”