Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

1kখোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২৮ জুন ২০১৬: সরকার ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ঠিক কত শতাংশ কমানো হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
তৈরি পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর হার ১ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হতে পারে বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবি আর) একটি ঊর্ধ্বতন সূত্র জানিয়েছে।
রপ্তানিমুখী পোশাকমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, বিটিএমএ, বিকেএমইএসহ সংশ্লিষ্ট খাতের সংগঠনগুলোর উৎসে কর অব্যাহতির দাবি জানিয়ে আসছিল। এমনকি তৈরি পোশাকশিল্পের সংগঠনগুলোর এই দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই)। তাদের দাবির মুখেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১ দশমিক ৫০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেন।
এ বিষয়ে এনবি আরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এনবি আরের সুপারিশক্রমে তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানিতে উৎসে কর ১ শতাংশ করা হতে পারে। এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বর্তমানে জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশন চলছে। সেখানে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আইন প্রণেতারাও ব্যবসায়ীদের মতামত তুলে ধরছেন। অর্থমন্ত্রী তাদের মতামত আমলে নিয়ে ২৯ জুন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
তিনি আরো বলেন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটেও তৈরি পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর এক লাফেই আড়াই গুণ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছিল। তখন উৎসে কর দশমিক ৩০ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দশমিক ৬০ শতাংশ করা হয়।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাতের সংকট থেকে উত্তরণের বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনা নিয়ে সাময়িক সময়ের জন্য তৈরি পোশাক ও অন্য সব রপ্তানি পণ্যের ওপর কর হার যথাক্রমে রপ্তানি মূল্যের দশমিক ৩০ শতাংশ ও দশমিক ৬০ শতাংশ করা হয়েছিল বলে অর্থমন্ত্রী ওই বাজেট বক্তৃতায় দাবি করেছিলেন। সেই সংকট এখন আর নেই দাবি অর্থ মন্ত্রণালয়ের।
যদিও ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার পর গত ১৮ জুন তৈরি পোশাক খাতের ছয়টি সংগঠন একত্রে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, ‘পোশাকশিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক বাড়িয়ে ৩ থেকে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এর সঙ্গে আনুষঙ্গিক অন্যান্য বাড়তি ব্যয় যুক্ত হয়ে পোশাক শিল্পে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে ৩৬ থেকে ৫০ শতাংশ। এ পরিস্থিতিতে পোশাক রপ্তানি থেকে বড় জোর ৩ শতাংশ মুনাফা অর্জন সম্ভব করা হবে। এর সঙ্গে যদি উৎসে কর কাটার হার দেড় শ ভাগ বাড়ে, তাহলে তাদের পক্ষে ব্যবসায় টিকে থাকাই অসম্ভব হবে। তাই অবিলম্বে উৎসে কর কর্তনের হার বাড়ানোর প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বিনিয়োগে উদ্যোক্তারা উৎসাহ হারাবে এবং অবধারিতভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাবে।’
এদিকে এনবি আরের অন্য একটি সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত উৎসে কর থেকে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। আগামী অর্থবছরে এই খাত থেকে সরকার ৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের প্রত্যাশা করছে। এখন যদি উৎসে কর হার কমানো হয় তাহলে এই খাতে রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও মনে করেন এনবি আরের ঊর্ধ্বতনরা।