খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১৩ জুলাই ২০১৬: বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলায় মৈত্রী সুপার থারমাল প্রজেক্ট বাস্তবায়নে মূল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ভারতের সঙ্গে ইপিসি (টার্নকী) চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে দুই দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। এতে যৌথভাবে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক উজ্জ্বল কান্তি ভট্টাচার্য ও ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেডের প্রতিনিধি প্রেম পাল যাদভ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে প্রযুক্তিগত ও আর্থিক মূল্যায়নে সবচেয়ে উপযুক্ত বিবেচিত হওয়ায় এই দুটি কোম্পানিকে নির্বাচিত করা হয়েছে। ১ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের এই চুক্তির অর্থায়ন করবে ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে বলেও জানানো হয় অনুষ্ঠানে।
ইপিসি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, এই প্রকল্প নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। তবে একজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন রামপাল সুন্দরবনে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলবে না। আমরাও সেটা আশ্বস্ত করতে চাই। রামপালে আমাদের দেশের বিদ্যুৎ খাত লাভবানই হবে। তিনি বলেন, আমাদের উচিত সামনের দিকে তাকানো। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা থেমে থাকবে না। কোনো ধরনের ভয়-ভীতি, সন্ত্রাসবাদ এদেশের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে পারবে না। তাই যুবকদের প্রতি আহ্বান জানাবো, সর্বনাশ, ধর্মান্ধতার পথ ছেড়ে সঠিক পথে আসুন। দেশের উন্নয়নে কাজ করুন।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের সবচেয়ে বড় প্রজেক্ট রামপাল। বন্ধুত্বের স্বাক্ষর হিসেবে আমরা ভারত থেকে আরো বিদ্যুৎ পেতে যাচ্ছি। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর দূরদৃষ্টির কারণে আমাদের উন্নতি সাধিত হচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, এর আগে অনেক প্রকল্প নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। পরে দেখা গেছে সরকারের উদ্যোগই সঠিক পথে ছিল। আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, আগের যেকোনো প্রকল্পের চেয়ে অনেক ভালো প্রযুক্তি দিয়ে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে। দুই প্রধানমন্ত্রী তাদের কমিটমেন্ট রক্ষার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করবেন।
অনুষ্ঠানে ভারতের বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সচিব প্রদীপ কুমার পূজারী বলেন, আমরা নিশ্চিত করছি, এই প্রকল্প নির্দিষ্ট সময় ও ব্যয়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে। এর জন্য আমাদের সক্রিয় ভূমিকা থাকবে। আমরা উভয় পক্ষ খুব ঘনিষ্ঠভাবে এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকবো।
বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবনে কোনো ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। আমরা এটা নিশ্চিত করছি। এই প্রকল্প খুবই হেল্পফুল হবে আমাদের জন্য।
এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশ এর বন্ধুত্বের দ্বার আরো উন্মোচিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।