Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

jamalpurখোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই ২০১৬: জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে শুক্রবার রুদ্র বয়ড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে ৮টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তির টাকা বিতরণের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের যোগসাজসে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি টাকা বিতরনের অভিযোগ পাওয়া যায়।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের রুদ্র বয়ড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গত শুক্রবার সকাল থেকে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তির টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

উপবৃত্তির টাকা বিতরনের বিদ্যালয় গুলো হল – পূর্ব বয়ড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোবিন্দনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, তারাকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুঠিয়ারপাড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বগাড়পাড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিন্নাফৈর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোবিন্দপটল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পশ্চিম পোগলদিঘা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় । ২০১৫ জুলাই থেকে ডিসেম্বর এবং ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের এক বছরের উপবৃত্তির টাকা বিতরন করা হয়। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ফেরদৌসের যোগসাজসে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রতি শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকা ৩০শ টাকা থেকে ৬শত টাকা পর্যন্ত কেটে রেখে বিতরন করেছে।

পোগলদিঘা ইউনিয়নের বগারপাড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম-শ্রেনীর শিক্ষার্থী পলিন মিয়ার মা পারভীন আক্তার জানান, আমার মেয়ের উপবৃত্তির ১২শত টাকার মধ্যে আমাকে ৫শত ৭০টাকা দিয়েছে।

একই বিদ্যালয়ের অপর শিক্ষার্থী মাহিন মিয়ার মা এমেলি বেগম জানান, ১২শত টাকা উপবৃত্তির মধ্যে আমাকে ৯শত টাকা দিয়েছে। তারাকান্দি সরক্রাী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাকিবুল হাসানের মা পাভিন বেগম জানান, ১২শত টাকা উপবৃত্তির মধ্যে আমাকে ৫শত টাকা দিয়েছে।

পুঠিয়ারপাড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম-শ্রেনীর শিক্ষার্থী আখি খাতুনের মা মিনা বেগম জানান,মেয়ের ১২শত উপবৃত্তি থেকে আমাকে ৬শত টাকা দিয়েছে।

বগারপাড় সরকারী প্রথামিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মুনছুর স্বপন জানান, পাঠ দানের জন্য অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়েছিলাম । শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা থেকে একশত টাকা করে কম দিয়েছি।

গোবিন্দনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুণ অর রশিদ জানান, উপবৃত্তির টাকা আমাদের দেওয়ার কথা না টাকা দিবে ব্যাংকের লোক কি যে বিপদে পড়েছি । টাকা বিতরনের সিট দেখেইতো টাকা বিতরন করছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্কুলের পিয়ন বলেন, টাকাটা স্যাররা একাই নেন না তারা উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও জেলার শিক্ষা অফিসের কর্মকতাদের কেউ দেন।

এ ব্যাপারে জামালপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল আলিম জানান, আপনারা যাছাই-বাছাই করে দেখেন যদি আমাদের কাছে কোন প্রকার অভিযোগ আসে তবে আমরা তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব এবং কি যদি শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা বিতরনের অনিয়ম হয় ও কোন শিক্ষক জরিত থাকে তবে তাকে বরখাস্ত করা হবে। আর যদি শিক্ষা অফিসের কোন কর্মকতা-কর্মচারি জড়িত থাকে তবে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ফেরদৌসের কাছে জানতে চাইলে তিনি রেগে গিয়ে বলেন, আপনারা যতই লেখালেখি করেন, যতই খোজ খবর নেননা না কেন আপনাদের কাউকে (সাংবাদিকদের) একটাকাও দেওয়া হবে না। আর টাকা কম দিলেও তার কোন প্রমান আছে আপনাদের কাছে। আমি বিতরনের সময় গিয়েছিলাম কিছুক্ষন থাকার পড় চলে আসি। আমি আসার পড়ে কি হয়েছে সেটা জানি না।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত ইউ,এন,ও) মিজানুর রহমান জানান, উপবৃত্তির টাকা থেকে টাকা অনিয়ম দুর্নীতি হলে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।