খোলা বাজার২৪,বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই ২০১৬: আলিফ হোসেন,তানোর : রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) নির্বাচনী আসনের মহাজোট তথা আওয়ামী লীগ দলীয় বিজয়ী প্রার্থী সংসদ সদস্য, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বিশিষ্ট শিল্পপতি ওমর ফারুক চৌধূরী এমপিকে গণমানুষের নেতা আখ্যা দিয়ে তাকে মন্ত্রীসভায় স্থান দিতে দাবী করেছেন রাজশাহী অঞ্চলের লাখো মানুষ, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীগণ। জানা গেছে, তাকে মন্ত্রীসভায় স্থান না দেয়ায় রাজশাহী অঞ্চলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। রাজশাহী অঞ্চলে দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ এমপি ওমর ফারুক চৌধূরীকে মন্ত্রীসভায় দেখতে চাই। দীর্ঘ প্রায় দু’দশক পর এই আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধূরী পর পর দু’বার বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। রাজশাহী অঞ্চলে দীর্ঘ দু’দশক পর ফারুক চৌধূরীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে গণজোয়ার ও গতিশীলতা এসেছে এবং তাকে ঘিরেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি আর্বতিত হচ্ছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত, রাজশাহী অঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত ও সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল রাখতে হলে অবশ্যই ওমর ফারুক চৌধূরীকে মন্ত্রী করার কেনো বিকল্প নাই। আর সেটা না হলে এই অঞ্চলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইমেজ সঙ্কট দেখা দিবে। কারণ হিসেবে তাঁরা বলেন, বিগত সরকারের সময়ে এই আসনের সাংসদ ব্যারিষ্টার আমিনুল হক বেশ কয়েক বার মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। আর ওই সময় এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ এমনকি বেশ কিছু অপ্রত্যাশিত উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। ফলে এর পর থেকেই এই নির্বাচনী আসনটি হেভিওয়েট মর্যাদা লাভ করেছে। এখান থেকে যারাই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তাঁরা সব সময় সরকারের মন্ত্রীসভায় ঠাঁই পেয়েছে। বিগত দিনে আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ের দিকে ওমর ফারুক চৌধূরীকে শিল্প প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল। এদিকে শিল্প প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েই তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় যোগাযোগ-অবকাঠামো-শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও কৃষিক্ষেত্রে বেশ কিছু অপ্রত্যাশিত উন্নয়ন কাজ শুরু করেন। কিšত্ত এসব উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হবার পূর্বেই সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ও আওয়ামী লীগ ফের সরকার গঠন করেন। তবে এমপি ফারুক চৌধূরীকে এবার মন্ত্রীসভায় স্থান দেয়া হয়নি। ফলে এসব উন্নয়ন কাজের গতি মন্থর হয়ে পড়েছে। এসব রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত, ওমর ফারুক চৌধূরীকে বিগত সরকার সময়ের উন্নয়ন কর্মকান্ডকে ছাড়িয়ে যেতে হবে। আর সেই উন্নয়ন কর্মান্ডকে ছাড়িয়ে যেতে হলে ফারুক চৌধূরীকে মন্ত্রীসভায় স্থান দিতে হবে। কেননা কেবিনেট মন্ত্রীর এলাকা থেকে নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী হতে না পারলে সংসদ সদস্য হয়ে বিগত সময়ের উন্নয়ন কর্মকান্ডকে ছাড়িয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। আর এটা করতে না পারলে আগামী সংসদ নির্বাচনে ব্যক্তি ওমর ফারুক চৌধূরী নয় কার্যত আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে এমপি ফারুক চৌধূরীর মন্ত্রী হবার দাবির প্রতি সাধারণ মানুষের সমর্থন দিন দিন বাড়ছে। রাজশাহী অঞ্চলের দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের প্রাণের দাবি এখন একটাই এমপি ফারুক চৌধূরীকে মন্ত্রী হিসেবে দেখতে পাওয়া। বাধাইড় ইউপির (সাবেক) চেয়ারম্যান ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেছেন, এই আসন থেকে ইতিপূর্বে বিএনপির এমপিরা বরাবরই পূর্ণ মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। সেই মন্ত্রীর আসনে দ্বিতীয়বার আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটের প্রার্থী জয়লাভ করলেও তাকে মন্ত্রী পরিষদে স্থান না দেওয়া হয়নি। এটা আমাদের প্রতি অবজ্ঞা ও দৃষ্টিকটু দেখায় আমাদের দাবী তাঁকে মন্ত্রী পরিষদে স্থান দেয়া হোক। তানোর এ,কে সরকার ডিগ্রী কলেজের (সাবেক) অধ্যক্ষ ও উপজেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির আহবায়ক নারায়ন চন্দ্র বিশ্বাষ বলেন, আমাদের এলাকা থেকে কোন মন্ত্রী না থাকায় আমরা হতাশ হয়েছি। দেশ স্বাধীনের পর যত সরকার এসেছেন প্রতিবারই রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসন থেকে মন্ত্রী হয়েছেন। এবার আশা একটু বেশী ছিলো কারণ এর আগে কখনো এখানে আওয়ামী লীগ থেকে এত বড় বিজয় পায়নি। আমাদের এখনো বিশ্বাস গণতন্ত্রের মানসকন্যা ও জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভেবে দেখবেন। তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র ফিরোজ সরকার বলেন, মন্ত্রীর এলাকা থেকে নির্বাচিত হলেও তাঁকে মন্ত্রী না করায় আমরা সাধারণ মানুষ চরম হতাশ। আমাদের আশা আগামীতে তিনি মন্ত্রী সভায় স্থান পাবেন। উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মুন্ডুমালা পৌর মেয়র গোলাম রাব্বানী বলেন, রাজশাহী অঞ্চলের সাধারণ মানুষের প্রাণের দাবি একটাই ফারুক চৌধূরীকে মন্ত্রী সভায় স্থান দেয়া হোক। তিনি আরও বলেন, এটা আমাদেরও দাবি। তিনি বলেন,এ অঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত ও আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রম জোরদার করতেই তাকে মন্ত্রী সভায় স্থান দেয়া হবে বলে আমরা এখনো পরম আশাবাদি।