Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

47খোলা বাজার২৪, রোববার, ২৪ জুলাই ২০১৬: বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন এখনও পূর্ণাঙ্গ হয়নি। এই কমিটি গঠনের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান আরো সময় নিতে চাইছেন। তবে এই কমিটি গঠনে সময় নিলেও বিভিন্ন দেশের তৃণমূল পর্যায়ে কমিটি গঠন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের স্টেটে কমিটি গঠন শুরু করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি স্টেটের মধ্যে ইতোমধ্যে ওয়াশিংটন, মিশিগানসহ ছয়টি অঙ্গরাজ্যে স্টেট কমিটি করেছে। এখন চলছে নিউইয়র্ক সেস্ট কমিটি গঠনের কাজ। এই জন্য বিএনপি নেতা এহসানুল হক মিলন রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। তিনি অন্যান্য স্টেটে গিয়েও কমিটি করবেন। এদিকে নিউইয়র্ক বিএনপির কমিটি গঠন করার জন্য কাজ করছেন মিলন। খুব শিগগিরই সম্মেলন করে এই কমিটি গঠন করবেন। এই ব্যাপারে বিএনপির নেতারাও কাজ করছেন।

স্টেট কমিটির বিভিন্ন পদে যারা দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন তারা মিলনের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। স্টেট কমিটির বাইরে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির দায়িত্ব কারা পাবেন এনিয়ে তীব্র প্রতিযোগিতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি গঠনের বিষয়টি এখনও চুড়ান্ত হয়নি। তারপরও সম্ভাব্য প্রার্থীরা কাজ করে যাচ্ছেন। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সভাপতি পদে গিয়াস আহমেদ, জিল্লুর রহমান জিল্লু ও স¤্রাট তিনজন বিএনপির সভাপতি পদে প্রার্থী হতে চান। তবে এর আগে শোনা গিয়েছিলো তারেক রহমান ও খালেদা জিয়া গিয়াস আহমেদকেই মনোনীত করতে চান। তারপক্ষে বেশিরভাগ নেতারা ও কর্মীরা সমর্থন দিলেও এই ব্যাপারে স্থানীয় কোন কোন নেতা বিরোধিতা করছেন। আর যারা বিএনপির কমিটিতে ভাল অবস্থান পাবেন না বলে আশঙ্কা করছেন তারা তারেক রহমানের কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি এখন প্রয়োজন নেই। সেস্ট কমিটি গঠন করা হলেই হবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক নেতারা সেস্ট কমিটির নেতা হতে পারবেন না। কারণ তারা এক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির দায়িত্বে ছিলেন। এখন তারা চাইলেও স্টেট কমিটির নেতার পদে অধিষ্ঠিত হওয়া হবে না। কারণ তারা আগেই এর চেয়ে উচ্চ পদে ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্রের ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা গিয়াস আহমেদ বলেন, আমরা ছাত্রদল থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি দায়িত্ব পালন করেছি। এখন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সভাপতির পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি। কিন্তু এই অবস্থায় যারা আমাদের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্টকে বলছেন বিএনপির যুক্তরাষ্ট্রের কমিটি করার প্রয়োজন নেই। স্টেট কমিটি চলবে তারা সঠিক পরামর্শ দিচ্ছেন না। কারণ বিএনপির কথাগুলো যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে, স্টেট ডিপার্টমেন্টের কাছে ও কংগ্রেস ম্যানদের কাছে তুলে ধরার জন্য অভিজ্ঞ ও পরিচিত নেতাদের দায়িত্ব দিলে সুবিধা হবে। না হলে কেবল সেস্ট কমিটির নেতারা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করতে পারবেন না।
এদিকে সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সভাপতি পদে প্রার্থী হতে পারেন এমন নাম রয়েছে তিনজনের। এরমধ্যে রয়েছে গিয়াস আহমেদ, জিল্লুর রহমান জিল্লু ও সম্রাট। তবে সূত্র জানায়, এরমধ্যে গিয়াস আহমেদকে সভাপতি করে যদি বাকি দুইজনকে বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাহলে ভাল হবে। তাছাড়া এখন বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদকের পদ মোট ১২টি। এরমধ্যে ৭টি পূর্ণাঙ্গ। আর সাতটি সহকারি। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু গুরুত্বপূর্ন এই কারণে সেখানে দুইজন সম্পাদককে দায়িত্ব দেওয়া হলে তারা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে বিএনপির বিষয়গুলো তুলে ধরার পাশাপাশি আগামীতে সহযোগিতা পাবেন।
সূত্র জানায়, যারা যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির বিভিন্ন পদে মনোনীত হতে পারবেন না তারা কমিটি করার বিরোধিতা করে তারেক রহমানের কাছে নানা কথা বলে বেড়াচ্ছেন। এই ব্যাপারে কাজটি ঠিক করছেন না কারণ তারা দলের স্বার্থ না দেখে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ বিবেচনা করছেন। কারণ যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকার কারণে অনেক সমস্যা হচ্ছে।
আগামী সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাবেন জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য। এই জন্য যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যেখানেই শেখ হাসিনা সেখানেই তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন। প্রধানমন্ত্রীর বিমানবন্দর থেকে শুরু করে তার হোটেলে যাওয়া পর্যন্ত তারা বিরোধিতা করবেন। ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে সড়কে অবস্থান নিবেন। বিমানবন্দরের সামনে বিক্ষোভ করবেন। সেই সঙ্গে তারা জাতিসংঘের সামনেও অধিবেশন চলাকালে বিক্ষোভ করবেন।
গিয়াস আহমেদ বলেন, আমরা চেষ্টা করছি আগামী সেপ্টেম্বরের জন্য প্রস্তুতি নিতে। ওই প্রস্তুতি আমরা এমনভাবে নেব যাতে করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে আসার পর পদে পদে আমাদের বাঁধার মুখে পড়েন। কারণ এখন বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। স্বৈরতন্ত্র চলছে। সেখানে মানুষের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। সরকার ছাড়া কোন মানুষ শান্তিতে কথাও বলতে পারে না। দেশের মানুষ নানাভাবে নির্যাতিত। দেশে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটেছে। এই অবস্থায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনে যে বাংলাদেশকে সরকার সহায়তা দিতে চাইছে সেই সহযোগিতা নিচ্ছে না। কিন্তু আমরা চাই যুক্তরাষ্ট্র সহ বিশ্বের যেসব দেশ সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনের জন্য কাজ করতে তাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই তা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, আমরা এই ব্যাপারে আমাদের দলনেত্রীকেও বিষয়টি বলেছি।
বিএনপির সিনিয়র এক নেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি করা হবে না দল থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কমিটি গঠন করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেই হিসাবে কমিটি হবে। তারেক রহমানের কাছে অনেকেই অনেক কথা বলতে পারেন। কিন্তু তিনি সিদ্ধান্ত নিবেন বিচক্ষনতার সঙ্গে। তাই এই ব্যাপারে আরো অপেক্ষা করতে হবে। ঢাকায় বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার পর এরপর বিদেশেরও কমিটিগুলো করা হবে। এখন কাজ করার জন্য বিভিন্ন সিটি ও স্টেটে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। বিএনপিকে বিদেশেও মাঠ পর্যায়ে সাংগঠনিক কাঠামো সুদৃঢ় করা হবে।