Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

টাঙ্গাইলে পানিতে ভাসছে চরের মানুষখোলা বাজার২৪, রোববার, ৩১ জুলাই ২০১৬: গত কয়েকদিনের অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির কারণে নদি তীরবর্তী বিভিন্ন চরাঞ্চলের মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে জন জীবন। গবাদিপশু হাস মুরগি নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে চরাঞ্চলের লক্ষাধীক মানুষ। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত ক’দিনে যমুনার পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে সৃষ্ট বন্যায় যমুনা নদি তীরবর্তী গ্রামগুলোর লক্ষাধীক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। টাঙ্গাইলের উত্তরাঞ্চলের গোপালপু, ভূঞাপুর, কালিহাতী ও টাঙ্গাইল সদরের চরাঞ্চলের গ্রামের লক্ষাধীক মানুষ পানি বন্ধি অবস্থায় রয়েছে। একদিকে পানি বৃদ্ধি অন্যদিকে বৃষ্টির কারণে দূর্বিসহ হয়ে পড়েছে জনজীবন। গরু-ছাগল, হাস-মুরগি নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয়ের স্থান খুজছে অনেকে। কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছে বেড়িবাধের উপর। কিন্তু বেড়িবাধ ভাঙ্গার আশংকায় সেখান থেকে উঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ আসছে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ থেকে। ফলে বাধে আশ্রয় নিতে পারছে না বন্যা দুর্গোতরা। বন্যায় কবলিত ছিন্নমূল পরিবারগুলো অতিকষ্টে আহার-অর্ধাহার অবস্থায় দিন যাপন করছে। ভূঞাপুরের বৃহত গোবিন্দাসী গরুর হাট, গোবিন্দাসী বাজার, গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় পানি উঠেছে এবং ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে।

বন্যাকবলিত এলাকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যালয় মাঠে এবং ঘরে পানি উঠায় গত ২৬ জুলাই হতে পর্যায়ক্রমে চরাঞ্চলের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আনুষ্ঠানিক বন্ধ ঘোষনা না করলেও কোন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসতে না পাড়ায় প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোন প্রকার কার্যক্রম নেই।

এদিকে গোবিন্দাসী বাজারের দক্ষিণে গোপালগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতলা ভবনটি হুমকির মুখে রয়েছে। নদী থেকে মাত্র ২০ফুট দুরে দাঁড়িয়ে আছে এই ভবন। মাত্র ২-১ ঘন্টার ভাঙনে বিলীন হয়ে যেতে পারে ৫০ লক্ষাধিক টাকা ব্যায়ে নির্মিত এই সরকারি সম্পদটি। শুধু এটাই নয় আশপাশে ব্যাক্তি মালিকানা পাকা বাড়ীঘর রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। এখানে সামান্য কিছু জি ও ব্যাগ অথবা প্যালাসাইটিং এর ব্যাবস্থা হলে রক্ষা হতে পারে এসব সম্পদগুলো।

গাবসারা ইউনিয়নের বন্যাদুর্গোত বেলটিয়াপাড়া গ্রামের মোকছেদ আলী, নুরু শেখ, সমিরন নেছাসহ আরো অনেকে জানান, আমাগো বাড়ীঘর ভাইঙ্গা গেছে, জমিজমা বন্যায় ডুইবা গেছে, ওহন পর্যন্ত কোন কিছুই সরকার দেয় নাই।

ভূঞাপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ সাখাওয়াত হোসেন জানান, বন্যা দূর্যোগপূর্ন জরুরী অবস্থার জন্য চরাঞ্চলের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাময়িক বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। সেগুলো বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসার সাথে সাথে কার্যক্রম শুরু হবে।

ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম জানান, বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ। গাবসারা, অর্জুনা, নিরাইল ও গোবিন্দাসী ইউনিয়নের বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং যাতে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রাখা যায় তার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. সাহিনূল ইসলাম তরফদার বাদল জানান, টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক মহোদয় বন্যার্তদের জন্য তাৎক্ষনিক প্রায় ৩০ মেট্রিক টন খাদ্য সামগ্রী বরাদ্দ দিয়েছেন। বন্যার্তদের মধ্যে সেগুলো দূত পৌছে যাবে।

টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহজাহান সিরাজ জানান, বন্যা দূর্গোতদের মধ্যে হাজার হাজার সমস্যা। আমাদের একটি টাকাও ফান্ড নাই। শুধু ঘুরে দেখা ছাড়া কিছুই করার নাই।