খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২ আগস্ট ২০১৬: দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর সরকারের করণীয় নির্ধারণ করতে চায় আওয়ামী লীগ। বন্যা দুর্গত মানুষদের সহায়তা দেয়ার জন্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সংশ্লিষ্ট জেলা কমিটির নেতাদের নিয়ে আটটি টিম গঠন করা হয়েছে। এ টিমগুলো গতকাল সোমবার থেকেই তাদের ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে কেন্দ্রীয় নেতারা মঙ্গলবার থেকে দুর্গত এলাকা সফর করবেন।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করছে আওয়ামী লীগ। কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, জামালপুর, শরীয়তপুরের নাড়িয়া ও মানিকগঞ্জের ঘিওরে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করবেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে গঠিত টিমগুলো।
দলটির নেতারা জানিয়েছেন, বন্যা দুর্গত এলাকার বন্যার্তদের প্রয়োজন অনুসারে তাদের মাঝে শুকনো খাবার, চাল, ডাল, শাড়ি, লুঙ্গি ও টাকা বিতরণ করবেন। তবে, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর বন্যার্তদের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারকে পরামর্শ দিবে এ টিমগুলো।
তারা বলেছেন, বন্যার পানি যেখানে আসার তা এসে গেছে। তবে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরই মূল সমস্যা দেখা দেবে। আর সে সম্পর্কে সরকারকে পরামর্শ দিতেই টিমগুলো কাজ করবে। গঠিত টিমগুলো যে পরামর্শ দেবে সে অনুযায়ী সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তারা জানান, বন্যা দুর্গতদের সমস্যা জানতে এরই মধ্যে কাজ করছে জেলার নেতারা। তারা দুর্গতদের সমস্যা ও কারণীয় নির্ধারণ করতে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে।
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কর্ণেল (অব.) ফারুক খান বলেন, ‘আমাদের টিমে জেলা নেতারা সোমবার থেকেই তাদের কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি টিম লালমনিরহাটে যাবে। সেখানে আমরা তিনটি স্থানে ত্রাণ বিতরণ করব।
সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘মঙ্গলবার আমি আমার নির্বাচনী এলাকা শরীয়তপুরের নাড়িয়ায় ত্রাণ বিতরণ করব। এখানে দল ছাড়াও আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকেও দুর্গতদের আর্থিকভাবে সহায়তা করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে ফরিদপুর, মাদারীপুর ও রাজবাড়ীর বন্যা দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হবে। তবে এসব এলাকায় আমাদের সংশ্লিষ্ট জেলার নেতারা ত্রাণ কার্যক্রম করছেন।
আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করব। এর মধ্যে যে এলাকায় বন্যা দুর্গতদের আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন সেখানে তাদের আর্থিকভাবে সাহায্য করা হবে। এছাড়া যেখানে অন্যান্য সাহায্য করা দরকার তাও তাদের দেয়া হবে।’
উপ-দপ্তর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাশ বলেন, ‘৪ আগস্ট মুন্সিগঞ্জে ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ত্রাণ বিতরণ করা হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী বলেন, আমরা মঙ্গলবার থেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে বিভিন্ন টিম বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করবে। তারা দুর্গত মাঝে শুকনো খাবার, চাল, ডালসহ আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে।
অতিবৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে উত্তরাঞ্চলের প্রধান প্রধান নদ-নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে ডুবে গেছে নিম্নাঞ্চল। অন্তত ১২টি জেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
বন্যার কারণে ডুবে গেছে ফসলের মাঠ। খাবার ও আশ্রয়ের অভাবে দুর্গতদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। দুর্গত এলাকায় সরকার ত্রাণের ব্যবস্থা করলেও চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল বলে অভিযোগ করেছেন বন্যার্তরা। বিশেষ করে দুর্গম এলাকায় ত্রাণ একেবারেই পৌঁছে না বলে অভিযোগ করেছেন তারা।